ঘুষ না দেওয়ায় বেতন-অবসর ভাতার ফাইল আটকে জামায়াত নেতাদের ওপর ক্ষেপে গিয়ে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানে বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর সিনিয়র নার্স আতোয়ারা খাতুন এলপিআরের জন্য আবেদন করেন রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তা বরাবর। পরে ইএলপিসিতে প্রতিস্বাক্ষরের জন্য ১৭ নভেম্বর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে ফাইল প্রেরণ করেন ওই কর্মকর্তা।
২০২৫ সালের পহেলা মার্চ থেকে অদ্যাবধি বেতন-অবসর ভাতা থেকে বঞ্চিত নার্স আতোয়ারা খাতুন। তবে ওই ফাইল কোনো কারণ ছাড়াই এখনো আটকে রেখেছেন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা।
আতোয়ারা খাতুন কলেজ পাড়া এলাকার জামায়াত কর্মী কাদের মোল্লার স্ত্রী।
এ বিষয়ে নার্স আতোয়ারা খাতুন অভিযোগ করে কালবেলাকে বলেন, প্রায় ৮ মাস ধরে হয়রানির শিকার হচ্ছি। এতে সব আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকার কারণে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। হয়তোবা অর্থনৈতিক সুবিধা দিতে পারলে আমার এমন হয়রানির শিকার হতে হতো না।
জামায়াত কর্মী আব্দুল কাদের মোল্লা অভিযোগ করে কালবেলাকে বলেন, আমার স্ত্রীর বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে রয়েছি। পরে আমার দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। কয়েকজনসহ আজ ওই অফিসে গেলে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান আগের মতোই বিধিবহির্ভূত অভিযোগের অজুহাত দেখিয়ে নেতাকর্মীদের ওপর ক্ষেপে ওঠে দুর্ব্যবহার করেন। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায়বিচার পেতে সংশ্লিষ্ট কর্মকতার কাছে অনুরোধ করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমরা কাউকে কোনো ধমক দেইনি। ওই কর্মকর্তা যা বলছেন তা মিথ্যা ও বানোয়াট।
জামায়াত নেতা আনোয়ার হোসেন কালবেলাকে বলেন, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কাছে আমার সহকর্মী ভাইয়ের স্ত্রীর বেতন-অবসর ভাতা বিষয়ে জানতে চাইলে সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে আমাদের ওপর ক্ষেপে ওঠেন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা। পরবর্তীতে বাকবিতণ্ডা হয়। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা আমির বিষয়টি নিষ্পত্তিও করে দেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান ঘুষ চাওয়ার বিষয় অস্বীকার করে কালবেলাকে বলেন, বিষয়টা হলো- পরিস্থিতি এখন অস্বাভাবিক। আমি চাই না এটি আপনাদের নিউজে আসুক। এমন কিছু ঘটেনি। এমনটা একটা অফিস বা আরেকটা অফিসে হতে পারে। তবে আমি কালক্ষেপণ করে দিচ্ছি না- বিষয়টা এমন নয়।
মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, না এমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এ প্রসঙ্গে রৌমারী উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির হায়দার আলী কালবেলাকে বলেন, বেতন-অবসর ভাতার ফাইল নিয়ে হয়রানি করার বিষয়ে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে আমি গিয়ে তাদের শান্ত হতে বলি। এক পর্যায়ে তাদের বাগবিতণ্ডার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মীমাংসা করে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, জেনেছি নার্স আতোয়ারা খাতুনের অবসর ভাতার ফাইল নিয়ে হয়রানি করছেন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা। তাই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদার কালবেলাকে জানান, ছুটিতে রয়েছি। তাই এ বিষয়ে আমি কিছুই অবগত নই। তবে খোঁজখবর নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন