বগুড়ার আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা ও পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি আব্দুল মতিন সরকারকে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (২২ জুন) বেলা ৩টার দিকে তাকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে বিচারক মেহেদী হাসান ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তার আব্দুল মতিন সরকার বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার মৃত মজিবর রহমান সরকারের ছেলে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এএসআই আবু জাফর গত বছরের ৪ আগস্ট শহরের স্টেশন রোডে সেলিম হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ছয় দিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে মতিন সরকারকে আদালতে হাজির করা হলে তার ফাঁসির দাবিতে আদালতের বাইরে মিছিল করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ছাড়া আদালত চত্বরে তার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে মারধর ও ডিম নিক্ষেপ করা হয়।
এর আগে শনিবার (২১ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার মোহাম্মদপুর বছিলা এলাকা থেকে বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
বগুড়ার জেলা ডিবির ওসি ইকবাল বাহার বলেন, মতিন সরকারের বিরুদ্ধে ডজনখানেক হত্যা মামলা ছাড়াও অস্ত্র, মাদক আইনেও একাধিক মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে একাধিক হত্যা মামলায় আসামি হওয়ায় তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। জেলা ডিবির একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় চলতি বছরের ১১ র্মাচ বগুড়ার স্পেশাল জজ আদালত আব্দুল মতিন সরকারকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অপরাধে তাকে ২ কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৩১৫ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মতিন সরকারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এক মামলার সাজার মেয়াদ শেষে আরেক মামলার সাজা কার্যক্রম শুরু হবে বলেও আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন।
বগুড়া ডিবি পুলিশের ওসি ইকবাল বাহার বলেন, আসামিকে পর্যাপ্ত আইনি নিরাপত্তা দিয়ে আদালতে নেওয়া হয়েছিল। বিক্ষুব্ধ কিছু মানুষ হট্টগোল করার চেষ্টা করেছেন। পুলিশ পেশাদারিত্বের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। এখন সবকিছু স্বাভাবিক আছে। আসামিকে রিমান্ডে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
মন্তব্য করুন