ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার চর বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা সুজিৎ ভক্তর বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অসদাচরণ ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
কর্মকর্তা সুজিৎ ভক্তর বিরুদ্ধে এসব বিষয় নিয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগও করেছেন ইউনিয়নের ভুক্তভোগী জাকেরের ডাঙ্গী গ্রামের আজগর চোকদার।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, সে জরিপের ডাঙ্গী মৌজার ১৯৭৫ নং খতিয়ানের তার জমির কর অনলাইনে দাখিল করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান। এরপর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা সুজিৎ ভক্ত ওই খতিয়ানের কর বাবদ তার নিকট ১৮ হাজার টাকা দাবি করেন। সে এত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ইউপি ভূমি কর্মকর্তা সুজিৎ কমিয়ে রাখার আশ্বাস দিয়ে ১২ হাজার টাকা দাবি করে। পরে সে আবারও অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে সে তার ভাতিজাকে সঙ্গে গিয়ে যাওয়ার পর ১০ হাজার টাকার একটি রসিদ হাতে দেন সুজিৎ। এরপর সে রশিদে দেখতে পায় ৩ হাজার ৩৮৯ টাকা অনলাইনে জমা দেওয়া হয়েছে বলে রশিদে উল্লেখ আছে।
পরে অতিরিক্ত যে টাকা নিয়েছে সেই টাকা ফেরত চাওয়ার জন্য ভাতিজাকে সঙ্গে ইউপি ভূমি অফিসে গেলে তহশিলদার সুজিৎ ভক্ত তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন ও কর পরিশোধের রসিদ বাতিলের হুমকি দেন। এসব কারণে তিনি প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী আজগর চোকদার বলেন, এই কর্মকর্তার কাছে সেবার জন্য গেলে সবাইকে হয়রানি করেন। তিনি প্রকাশ্যে বলেন, সরকার যে কয় টাকা বেতন দেয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। টাকা না দিলে আমি কোনো কাজ করবো না। আমি নিজে একজন ভুক্তভোগী এবং যারা তার কাছে গিয়ে হয়রানির শিকার হন, সবার দাবি তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। দুঃখের বিষয় অভিযোগের তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষের দিক থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের খবর পাইনি।
নিজের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা সুজিৎ ভক্ত বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টির সত্যতা যাচাই করছে। সেবা নিতে আসা আজগর চোকদার যেসব অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। তিনি নিজে অনলাইনে আবেদন করে নিজেই ভূমি উন্নয়ন কর পরিষদ করেছেন।
তিনি বলেন, ওনার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তার থেকে আমি কোনো টাকা নেইনি। হয়ত কোনো রেষারেষির কারণে ওনারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। তবে আমার প্রতি ওনাদের ক্ষোভটা ঠিক কি সে বিষয়ে আমি অবগত নই।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রামানন্দ পাল বলেন, ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে অবগত হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। আমি ঢাকায় ট্রেনিংয়ে আছি, বিস্তারিত অফিসে গিয়ে কাগজপত্র দেখে বলতে হবে।
মন্তব্য করুন