কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলা ও গাফিলতির কারণে মেধাবী এক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। নির্ধারিত সময়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফি দিলেও তার ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়নি।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম মোশাররফ হোসেন। তিনি রাজীবপুর সরকারি কলেজের মানবিক শাখার আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের কার্যক্রম শুরু করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফি নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ৩৬৫ টাকা। মোশাররফ হোসেন ওই টাকা পরিশোধ করলেও তার ফরম পূরণ হয়নি।
ভুক্তভোগী মোশাররফ হোসেন কালবেলাকে বলেন, আমরা ছয় বন্ধু একসঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও টাকা জমা দিয়ে রসিদ কলেজে জমা দিই। আমাদের কাছে থাকা অতিরিক্ত দুটি রসিদ কলেজের সহকারী অফিস সহায়ক শাজাহান নিয়ে নেন। বিপত্তি দেখা দেয়, যখন আমরা কলেজে অ্যাডমিট কার্ড নিতে যাই।
তিনি বলেন, সবাইকে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হলেও আমারটা পাওয়া যায়নি। পরে শিক্ষকরা খতিয়ে দেখে জানান, আমার ফরম পূরণই হয়নি। আমাকে জানানো হয়, এবার পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়, পরবর্তী বছর পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। তবুও আমি কলেজে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষা করি। পরে শাজাহান স্যার আমাকে ডেকে বলেন, ফরম পূরণ করতে চাইলে ৫ হাজার টাকা লাগবে।
মোশাররফ আরও বলেন, বোর্ডে ঘুষ দিয়ে ফরম পূরণ হবে বলে আমার কাছে থেকে কলেজের কম্পিউটার অপারেটর মনোয়ার হোসেন ৫ হাজার টাকা নেন।
ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে কলেজের কম্পিউটার অপারেটর মনোয়ার হোসেন কালবেলাকে বলেন, মিস ফরম ফিলাপের জন্য ৫ হাজার টাকা নিয়েছি। রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজিমুদ্দিনের মাধ্যমে ফরম পূরণ করিয়ে দেবেন বলে জানান তিনি।
কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন গাফিলতিতে হতাশা প্রকাশ করে আরেক পরীক্ষার্থী জাহিদ হাসান কালবেলাকে বলেন, স্যারদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে মোশাররফের ফরম পূরণ হয়নি। এখন তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমরা চাই, দ্রুত তার ফরম পূরণ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হোক। একই সঙ্গে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই। কারণ এদের মতো অসচেতনদের কারণে অনেক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যায়।
এ বিষয়ে রাজিবপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুল কাদের কালবেলাকে বলেন, ওই শিক্ষার্থী ফরম পূরণের সব টাকা জমা দিয়েছিল তা সত্য। কিন্তু মানুষ মাত্র ভুল, ভুল তো হতে পারে, যাতে করে ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে ইলাহী কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি শুনেছি, কলেজ অধ্যক্ষকে দ্রুত ওই শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন