কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৬:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
মা ও ২ সন্তানকে পিটিয়ে হত্যা

গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য মুরাদনগর

ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড়। ছবি : ‍কালবেলা
ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড়। ছবি : ‍কালবেলা

কুমিল্লার মুরাদনগরের কড়ইবাড়ী গ্রামে এক পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার পর গোটা গ্রাম এখন আতঙ্কের নগরী। গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে পুরো গ্রাম।

নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার জানান, রুবির বাড়ির সামনে ৮০-৯০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে আসে। প্রথমে তারা বাড়িতে ইট ছোড়ে, পরে ঢুকে পড়ে। রুবিকে মারতে মারতে উঠানে ফেলে রাখে। পাশের ঘর থেকে মেয়েরা বের হলে তাদেরও পেটানো হয়।

স্থানীয় আরেক ব্যক্তি জানান, চেয়ারম্যান শিমুল আর মেম্বার বাচ্চু সামনে ছিলেন। কেউ কাউকে থামায়নি। বরং লোকে বলেছে, ‘চেয়ারম্যান সাহেব আছেন, কিছু হবে না’। তারপর শুরু হয় পিটুনি।

নিহত রুবির আত্মীয় হানিফ মিয়া জানান, যারা মারল, তারা সাধারণ লোক না। তারা চেয়ারে বসা লোকদের দেখেই সাহস পেয়েছে। ওরা চুপ করে না থাকলে এমন হতো না।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নিজেরাই হামলার শিকার হয়ে এলাকা ছাড়ি। পরে গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ঘটনা ঘটিয়েছে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। অধিকাংশ বাড়িঘরে তালা ঝুলছে। গ্রামের রাস্তা ফাঁকা, পুরুষ সদস্যদের কাউকেই দেখা যাচ্ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা ফয়সাল জানান, রুবির পরিবার ৪০ বছর ধরে মাদক কেনাবেচায় জড়িত। কিন্তু এভাবে হত্যা তো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। তার ওপর চেয়ারম্যান-মেম্বার সামনে থাকায় আমরা চুপ ছিলাম।

পুলিশ সুপার নজির আহমেদ খান জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তদন্ত চলছে। জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে নিহতদের পরিবার এখনো মামলা করেনি কেন, সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা পরিবারকে সময় দিচ্ছি। চাই না তাদের ওপর কোনো চাপ তৈরি হোক।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান কালবেলাকে জানান, এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই অভিযান চলছে। এখনো কাউকে আটক করা যায়নি।

এর আগে মুরাদনগরে একই পরিবারের মা-মেয়ে এবং ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে বাঙ্গরা থানার আকবপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

কড়ইবাড়ি গ্রামের জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), তার পুত্র রাসেল মিয়া (২৮) ও মেয়ে জোনাকি আক্তারকে (২৩) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া নিহতের আরেক মেয়ে রুমাকে (২৮) গণপিটুন দেওয়া হলে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢাকায় তার চিকিৎসা চলছে।

পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত থাকলেও মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইসির বিজ্ঞপ্তি

ড্রয়ের আগে জেনে নিন ২০২৬ বিশ্বকাপের নতুন সব নিয়ম

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ঢাকা উত্তর ছাত্রদলের দোয়ার আয়োজন

শাকিবের যে উপদেশে বদলে গেলেন অপু

‘দেশের জন্য খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব আরও ৫ বছর অত্যন্ত প্রয়োজন’

দেশে ভিভিআইপি ও ভিআইপি কারা, কী সুবিধা পান তারা

নির্বাচন-গণভোটের সম্ভাব্য তারিখ জানালেন ইসি আনোয়ারুল

ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়াতে ওয়েবিনার

ক্রনিক কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায়

অনেকের শাসন দেখেছেন এবার ইসলামপন্থিদের সুযোগ দিন : রেজাউল করীম

১০

গাছে হাত-পা বাঁধা অটোরিকশাচালকের মরদেহ

১১

ঝুঁকির মুখে ৭১ কিমি রেলপথে ট্রেন চলাচল 

১২

গৃহবধূ লাবনী হত্যার রহস্য উন্মোচন

১৩

স্বেচ্ছাশ্রমে খেলার মাঠ ভরাট করল বিএনপির নেতাকর্মীরা

১৪

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার জন্য কারাগারে বই চেয়েছেন সাবেক এমপি তুহিন

১৫

ভাঙা দাঁতের খোঁচাতেও হতে পারে ভয়ংকর রোগ

১৬

সাদিক কায়েম সাইবার মামলা করে অনলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছে : ছাত্রদল

১৭

চাকরিতে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিতের আহ্বান ৪ ছাত্র সংসদের

১৮

বিএনপি-এনসিপির মধ্যে ঐক্য প্রয়োজন : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

১৯

আট ফুট লম্বা অজগর উদ্ধার

২০
X