পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ডেটোনেটর বিস্ফোরণে কবজি উড়ে গেল শিশুর

বড়পুকুরিয়ার কয়লাখনির পাশে পরিত্যক্ত এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (ডেটোনেটর) বিস্ফোরণ। ছবি : কালবেলা
বড়পুকুরিয়ার কয়লাখনির পাশে পরিত্যক্ত এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (ডেটোনেটর) বিস্ফোরণ। ছবি : কালবেলা

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির পাশে পরিত্যক্ত এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (ডেটোনেটর) বিস্ফোরণে এক শিশুর ডান হাতের কবজি উড়ে গেছে। মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) দুপুর ১২টায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিসংলগ্ন চৌহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত শিশুর নাম ইলিয়াস আলী (১০)। সে চৌহাটি গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে, সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী।

স্থানীয়রা জানান, দুপুর ১২টার দিকে ইলিয়াস কয়লাখনির ডাম্পিং এলাকা থেকে একটি ধাতব বস্তু পেয়ে তা বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে সেই ধাতব বস্তুটি মোবাইলের নষ্ট ব্যাটারির সঙ্গে সংযোগ দিলে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে তার ডান হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত হয়।

পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, কয়লাখনির প্রাচীর ঘেঁষে তারকাঁটা দিয়ে ঘেরা খনির ডাম্পিং এরিয়া। এখানে খনির বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ফেলা হয়। এসব বর্জ্য থেকে কয়লার সন্ধানে এলাকার লোকজন ওই ডাম্পিং এরিয়ায় প্রবেশ করে যৎসামান্য কয়লা পেয়ে থাকে। এসব বর্জ্যে সঙ্গে অনেক সময় মেলে এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস। পাশের গ্রাম চৌহাটির অনেকেই এই ডাম্পিং পয়েন্ট থেকে কয়লা সংগ্রহ করতে গিয়ে ওইসব এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস পেয়ে থাকে। তারা এর বিশদ কিছু জানে না। অনেক সময় তারা এগুলো নিয়ে নিজেদের বাড়িতে ফেলে রাখে।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ভূগর্ভস্থ একজন শ্রমিক বলেন, ‘এগুলো ডেটোনেটর। খনির অভ্যন্তরে বা ভূগর্ভে যেসব স্থানে মেশিন দিয়ে কয়লা কাটা সম্ভব হয় না। সেসব স্থানে এসব ডেটোনেটর স্থাপন করে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়লা সংগ্রহ করা হয়।’

এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা দাবি তুলেছেন, খনি এলাকার পুরোনো বিস্ফোরক উপাদান ও পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি অপসারণে প্রশাসনের আরও তৎপরতা দরকার, যেন এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে। এসব দ্রব্য কীভাবে সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে সেটাও দেখা দরকার খনি কর্তৃপক্ষের।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খান মো. জাফর সাদিক বলেন, ‘এটি ডেটোনেটর। খনির ভূগর্ভে কয়লা উত্তোলনের ক্ষেত্রে বিস্ফোরণের কাজে ব্যবহার করা হয়। এগুলো খুবই স্পর্শকাতর। এগুলো কোনটি অকেজো এবং কোনটি তাজা তা সাধারণভাবে কেউ বুঝতে পারার কথা নয়। তাছাড়া বাইরে পাওয়া ডেটোনেটরে কোনো সংযোগ নেই।

তিনি বলেন, ডেটোনেটরগুলো ডাম্পিং পয়েন্ট থেকেই কোনো না কোনোভাবে ধাতব বস্তু হিসেবে গ্রামবাসী সংগ্রহ করেছে। বিষয়টি আগে কেউ আমাদের নজরে আনেনি। ঘটনার পর আমরা জানতে পেরে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।

আহত শিশুর বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আগে তার চিকিৎসা চলুক। পরে তার বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে এবং পাশে থাকবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শ্বশুরের বিচারপতি হওয়া নিয়ে সমালোচনা, ব্যাখ্যা দিলেন সারজিস

কর্মক্ষেত্রে প্রকৌশলীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি আইইবির

রাকসু নির্বাচন : মনোনয়নপত্র বিতরণের সময় বাড়ল, পেছাবে ভোটের তারিখ

এসএ২০ লিগের নিলামে বাংলাদেশের ২৩ ক্রিকেটার

জবি বাংলা বিভাগের এক শিক্ষককে বহিষ্কার, ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা 

ছোট পর্দায় আসছে জনপ্রিয় তুর্কি সিরিজ ‘সুলতান আব্দুল হামিদ’

অবৈধ মোবাইল দিয়ে বন্দিরা আমাকে কল করেন : কারা মহাপরিদর্শক

বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশি প্রযোজকের সিনেমা

শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে : শামা ওবায়েদ 

অভিজ্ঞতা ছাড়াই চাকরি দিচ্ছে রকমারি ডটকম, বেতন ৩০ হাজার

১০

জীবিকার তাগিদে বের হয়ে প্রাণ হারালেন রফিকুল

১১

হঠাৎ অসুস্থ একই স্কুলের ২২ ছাত্রী

১২

কয়েকটি ইসলামি দলের সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে : সালাহউদ্দিন 

১৩

দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানোয় পরিবহনমন্ত্রীকে জরিমানা!

১৪

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে হামলাকারীদের কী সাজা হতে পারে

১৫

গকসু নির্বাচন : প্রথম দিনে ১৩টি মনোনয়নপত্র বিতরণ

১৬

ববির আবেগঘন পোস্ট

১৭

খুলনায় নদী থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার

১৮

প্রয়োজনে কেয়ামত পর্যন্ত অডিট বন্ধ থাকবে : এনবিআর চেয়ারম্যান

১৯

১ বলে ১৩ রান নিলেন ভারতের তারকা ওপেনার

২০
X