টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ত্রিভুজ প্রেমের বলি হয়েছেন প্রবাসী ফিরোজ আল মামুন। এ ঘটনায় প্রেমিকা ফিরোজা খাতুন ও তার অন্য প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৩ জুলাই) মির্জাপুর থানার ওসি মুহাম্মদ রাসেদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার (২১ জুলাই) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের তরফপুর মাটিয়াগাড়া এলাকায় এ খুনের ঘটনা ঘটে। নিহত ফিরোজ আল মামুন তরফপুর মাটিয়াগাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
তরফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজিজ রেজা বলেন, ফিরোজ আল মামুন দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় ছিলেন। সম্প্রতি তিনি ছুটিতে দেশে আসেন। ফিরোজ আল মামুনের খুনের ঘটনাটি রহস্যজনক।
স্থানীয়রা জানান, ফিরোজ অবিবাহিত ছিলেন। প্রবাসে থাকা অবস্থায় নিজ এলাকার এক গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। ওই নারী তার স্বামী বিদেশে থাকায় তার অবর্তমানে ফিরোজ ছাড়া আরও দুজনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে এলাকায় বিচার-সালিশও হয়েছে। সর্বশেষ ত্রিভুজ প্রেমের বলি হলেন প্রবাসী ফিরোজ আল মামুন।
স্থানীয় অন্তত ১০ জন নারী-পুরুষ জানান, সোমবার রাতে ফিরোজা বেগম টেলিফোনে বাড়িতে প্রেমিক ফিরোজ আল মামুনকে আসতে বলেন। এর একটু পরে অন্য প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া বাড়িতে প্রবেশ করেন। এ নিয়ে ফিরোজা খাতুন ও দুই প্রেমিকের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে ফিরোজ আল মামুনের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটে পড়ে। ফিরোজের লাশ গুম করার জন্য ফিরোজা খাতুন ও প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া বাড়ির পাশের ক্ষেতের আইলে ফেলে বাড়ি চলে আসে। পরে কৃষকরা ফিরোজের লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়।
এদিকে ফিরোজ আল মামুনের খুনের ঘটনায় তার ভগ্নিপতি ফরহাদ মোল্লা বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর মির্জাপুর থানা পুলিশ হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রেমিকা ফিরোজা খাতুন ও অন্য প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) জুয়েল রানা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। ত্রিভুজ প্রেমের কারণেই ফিরোজ আল মামুন খুন হয়েছেন। মামলার বাদী ফরহাদ মোল্লা, ফিরোজের মা জরিনা খাতুন, বোন শিল্পী ও কল্পনা আক্তার হত্যাকারীদের ফাঁসিসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
মির্জাপুর থানার ওসি মুহাম্মদ রাসেদুল ইসলাম বলেন, ত্রিভুজ প্রেমঘটিত কারণেই ফিরোজ আল মামুন খুন হয়েছেন। ত্রিভুজ প্রেমের বলি ফিরোজ আল মামুনের খুনের রহস্য উদ্ঘাটনসহ প্রেমিকা ফিরোজা খাতুন এবং তার অন্য প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন