বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

মা মাছ রক্ষায় অভয়াশ্রম, বেড়েছে দেশীয় মাছ 

দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাঁশ দিয়ে বেড়া ও সংরক্ষিত এলাকায় লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। ছবি : কালবেলা
দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাঁশ দিয়ে বেড়া ও সংরক্ষিত এলাকায় লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। ছবি : কালবেলা

বরগুনার বেতাগী উপজেলায় মা মাছ রক্ষায় গঠিত হয়েছে বিশেষ অভয়াশ্রম। নদী ও খালের নির্দিষ্ট এলাকাকে মাছের প্রজনন মৌসুমে ‘নিষিদ্ধ জোন’ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ উদ্যোগ স্থানীয় জেলেদের জীবিকায় যেমন ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে, তেমনি জাতীয়ভাবে মাছের উৎপাদনও বেড়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বেতাগী সদর ইউনিয়নের ঝোপখালী বেড়েরধন নদীতে নির্দিষ্ট এলাকায় গাছের ডাল ফেলা হয়েছে। বাঁশ দিয়ে বেড়া ও সংরক্ষিত এলাকায় লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। এ এলাকায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে মা মাছ ধরার ক্ষেত্রে। মা মাছ রক্ষায় বিশেষ ঝাউ ফেলা হয়েছে। এখানে মা মাছ প্রজননের সময় ডিম পাড়বে এবং মাছ উৎপাদন হবে।

জানা গেছে, প্রজনন মৌসুমে বিশেষ করে মার্চ থেকে মে এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে পোনা উৎপাদনের জন্য মা মাছ নিরাপদ পরিবেশ চায়। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এ সময়ে অতিরিক্ত মাছ ধরা, চায়না জাল ও বিষ প্রয়োগসহ নানা অবৈধ কর্মকাণ্ডের ফলে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন চক্র, কমে যায় জেলেদের আয়।

ঝোপখালী গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী জলিল হাওলাদার বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মা মাছ রক্ষায় নির্দিষ্ট এলাকায় মাছ ধরা নিষেধ করা হয়েছে। এতে দেশীয় মাছ বেড়েছে দ্বিগুণ। উপজেলা মৎস্য বিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করে ঝোপখালী খাল, বিষখালী নদীর কিছু অংশসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জলাশয়ে অভয়াশ্রম গঠন করে। এসব এলাকায় মাছ ধরা, জাল ফেলা কিংবা নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক টিমের মাধ্যমে নিয়মিত পাহারা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

বেতাগী সদর ইউনিয়নের ঝোপখালী গ্রামের জেলে মোশারেফ হোসেন ও লিটন বলছেন, অভয়াশ্রমের ফলে আগের চেয়ে অনেক বেশি মাছ উৎপাদন হবে। ফলে তাদের জীবনধারণ সহজ হচ্ছে।

বেতাগী মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুর রব সিকদার বলেন, অভয়াশ্রম টিকিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন সবার সচেতনতা। বিশেষ করে কিছু অসাধু ব্যক্তি এখনো গোপনে মাছ ধরার চেষ্টা করেন। তাদের রুখতে নিয়মিত অভিযান চালানো এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।

বেতাগী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. তুরান বলেন, মা মাছ রক্ষায় গঠিত অভয়াশ্রম এরই মধ্যে সুফল দিতে শুরু করেছে। এ উপজেলায় ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে মা মাছ রক্ষায় ৪ লাখ ৪০০ টাকা অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ সময় পার হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, মাছের পরিমাণ বেড়েছে। এ প্রকল্পের কারণে জলাশয়ে ধরা পড়ছে বড় আকারের মাছ। বিশেষ করে দেশীয় প্রজাতির মাছ বেড়েছে। এতে জেলেরা আগ্রহী হচ্ছেন নিয়ম মেনে চলতে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপিতে যোগ দিলেন কৃষকলীগের সাবেক ২ নেতা

‘মোটরসাইকেলটিকে ১শ মিটার টেনে নিয়ে যায় ঘাতক বাস’

তামাক চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

মধ্যরাতে ঝরল ২ প্রাণ

সীমান্তে মর্টারশেলের শব্দ, আতঙ্কে এলাকাবাসী

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ

নৌবাহিনী থামাল মিয়ানমারে সিমেন্ট পাচার

আবাসিক হোটেল থেকে নারী পর্যটকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ফয়সালের জামিন বিতর্ক নিয়ে আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাস

‘কোনো এক মিরাকেলের মধ্যে দিয়ে ফিরে আসেন ব্রাদার’

১০

মানবপাচার মোকাবিলায় ভুক্তভোগী কেন্দ্রিক আইনজীবী গড়ে তোলার আহ্বান

১১

লস অ্যাঞ্জেলেস কনস্যুলেটে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা

১২

সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

১৩

রিজার্ভ বেড়ে ৩২.৪৮ বিলিয়ন ডলার

১৪

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা গড়ার অঙ্গীকার শেখ আব্দুল্লাহর

১৫

হাদির বিষয়ে ড. ইউনূসকে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন

১৬

অবশেষে ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার

১৭

দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

১৮

পে স্কেল নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে যে সিদ্ধান্ত নিল কমিশন

১৯

গাড়ির গ্যারেজে ঝুলছিল চালকের মরদেহ

২০
X