জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনের চাঁদা চাওয়ার ভিডিও ভাইরালের পর তাকে কারণ দর্শানোর চিঠি (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে মহানগর কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী (দপ্তর) আরিফ মঈনুদ্দিন স্বাক্ষরিত শোকজের চিঠি পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, রোববার বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ মারফতে আপনার একটি ভিডিও এনসিপি, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির নজরে এসেছে। ফলে আপনার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। এমতাবস্থায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কেন আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে প্রধান যুগ্ম সমন্বয়কারী, এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর, মীর আরশাদুল হক বরাবর আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত ব্যাখা প্রদানের জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হলো।
এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক আন্দোলন বন্ধ করতে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠে নিজামের বিরুদ্ধে। রোববার সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনার আরেক ব্যক্তির সঙ্গে তার কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আন্দোলন বন্ধে টাকা চাইতে শোনা যায় তাকে (নিজাম উদ্দিন)।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দেড় মিনিটের ওই ভিডিওতে আফতাব হোসেন রিফাত নামে একজনকে নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে মেসেঞ্জারে কলে কথা বলতে দেখা যায়, যেটি অন্য আরেকটি ফোনে ভিডিও করা হয়। শুরুতে আফতাব হোসেন বলেন, ‘যদি মীর ভাইয়েরা আন্দোলন বন্ধ না করে তখন কী করব?’ জবাবে নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আন্দোলন বন্ধ করাব। তোমারে দিছে, টাকা দিছে?’ এ পাশ থেকে ‘হ্যাঁ’ জবাব দেন আফতাব।
কত লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে আফতাব বলেন, ‘পাঁচ’। এরপর নিজাম উদ্দিনকে বলতে শোনা যায় ‘আরও বেশি নিতা প্রেশার দিয়ে… তোমরা দেখো ওর থেকে আরও পাঁচ লাখ নিতে পারো কি না, নিতে পারলে ওদের আমি এনে, রোহান, মীরদের এসে কিছু দিয়ে দিলাম।’
এনসিপি চট্টগ্রাম নগরের প্রধান সমন্বয়কারী মীর আরশাদুল হককে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নোটিশ দাতা এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী (দপ্তর) আরিফ মঈনুদ্দিনের মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিন বলেন, কমিটি ঘোষণা করার পর পুরোনো একটি কল রেকর্ড ফাঁস করা হয়েছে- যেটির কোনো সত্যতা নেই। বন্দরের আন্দোলনের বিষয়ে নিজেদের মধ্যে একটি প্রাঙ্ক কলকে সামনে আনা হয়েছে। যিনি সেই কল রেকর্ড করেছিলেন তিনিও বিষয়টি জানেন। কলটি রেকর্ডকারী স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমে পাঠিয়ে হাস্যরসের সেই ভিডিওকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করেছে ষড়যন্ত্রকারীরা। আমি নোটিশটি পেয়েছি। আমি এটির ব্যাখ্যা দেব। ইনশাআল্লাহ আমি এখানেও জয়ী হব।
এর আগে গত ৫ জুলাই নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেন এক নারী। চিঠিতে ওই নারী উল্লেখ করেন, দুই কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে তার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় পুলিশে দিয়েছেন নিজাম উদ্দিন। নিজাম তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগর শাখার সদস্য সচিব ছিলেন। অভিযোগের পর তার পদও স্থগিত করা হয়। পরে তাকে পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন