বরিশালে স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার সঙ্গে বাস এবং থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাসের যাত্রী থ্রি-হুইলারে তোলাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ১৭ শিক্ষার্থীকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছাত্রীও রয়েছে।
এদিকে বাস শ্রমিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেছেন শ্রমিকরা। বিকেল ৪টায় ছাত্র-জনতার অবরোধ শেষ হওয়ার ১০ মিনিট পর থেকে তারা অবরোধ শুরু করেন। হামলাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাস চলবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারে তিন দফা দাবিতে লাগাতার সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে ছাত্র-জনতা। এ কারণে গত সাত দিন ধরে নথুল্লাবাদ থেকে বরিশাল-ঢাকা রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাস শ্রমিকরা জানিয়েছেন, বাস বন্ধ থাকলেও অবরোধ স্থলের কিছুটা দূর থেকে থ্রি-হুইলার চলাচল করছে। অবরোধ শেষ হওয়ার পূর্বে কিছু যাত্রী বাসে তোলা হয়। তখন থ্রি-হুইলার (মাহেন্দ্রা) চালকরা বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে থ্রি-হুইলারে তোলেন।
এ নিয়ে বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা এবং হাতাহাতি সৃষ্টি হয়। তখন ঘটনাস্থলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের পক্ষ নেয়। এ নিয়ে শিক্ষার্থী, বাস এবং থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মহিউদ্দিন রনি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, শ্রমিকদের হামলায় তাদের ১৭ ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়েছে। চলমান আন্দোলন বানচাল করতে বাস শ্রমিকরা হামলা করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা হলেন- মো. তাসিন (২৪), হৃদয় (২০), মিম (২০), জিনিয়া (২০), তাহছির (১৮), জান্নাত (১৭), তাছনিম (১৯), রোহান (১৯), আরাফাত (১৬), শরিফ (১৪), নয়ন (১৮), সিয়াম (১৮), শহিদুল (২০), হাসান (২৫), শহিদুল (২০), সূর্য (১৮) ও গাজী রিয়াদ (১৭)।
শ্রমিক নেতারা দাবি করেছেন, ছাত্ররা মাহেন্দ্র শ্রমিকদের পক্ষ নিয়ে বাস শ্রমিকদের ওপর হামলা করেছে। তারা বেশ কয়েকজন শ্রমিককে মারধর করেছে। এর প্রতিবাদে তারা সড়ক অবরোধ করেছেন। অবরোধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার কথা বলেন তারা। যদিও এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মোসারেফ হোসেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির হোসেন শিকদার কালবেলাকে বলেন, বাস এবং মাহেন্দ্রায় যাত্রী তোলাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক ও ছাত্রদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। পরে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা নথুল্লাবাদ থেকে চলে গেলে শ্রমিকরা অবরোধ শুরু করেছেন। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন