নলডাঙ্গা (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৫, ০৮:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রাস্তা নিয়ে দুর্ভোগ, ভেঙে যাচ্ছে বিয়ে!

ডুবন্ত সড়কের পানিতে নেমেই মানববন্ধন করে গ্রামবাসী। ছবি : কালবেলা
ডুবন্ত সড়কের পানিতে নেমেই মানববন্ধন করে গ্রামবাসী। ছবি : কালবেলা

রাস্তা নিয়ে দুর্ভোগে পানিবন্দি হয়ে আছে শতাধিক পরিবারের প্রায় তিন শতাধিক মানুষ। এ ছাড়াও এতে ভেঙে যাচ্ছে বিয়ের সম্বন্ধ। নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল ইউনিয়নের রায়সিংহপুর গ্রামের মানুষের জন্য বর্ষা মানেই দুঃস্বপ্ন। চলাচলের স্থানই তলিয়ে যায় বর্ষার পানিতে।

মাত্র ৩শ মিটার রাস্তার কারণে শিক্ষাসেবা, চিকিৎসা ও কৃষি বিপর্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি ভেঙে যাচ্ছে বিয়ের সম্বন্ধ। পাত্র বা পাত্রীপক্ষ পানি ভেঙে গ্রামে আসতে রাজি না হওয়ায় ভালো সম্বন্ধও নষ্ট হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে অভিযোগ করেও সমাধান না পেয়ে হতাশ গ্রামবাসী।

রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুরে এবার সেই ডুবন্ত সড়কের পানিতে নেমেই মানববন্ধন করে রাস্তার দাবি করেছেন গ্রামবাসী।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিএনপি নেতা মজিবর রহমান মধু, মালেক ব্যাপারী, সুকচান মণ্ডল, রহিম মণ্ডল, মজিবর ব্যাপারী, আলিম ব্যাপারী, আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ভোট এলে আসে আশ্বাস, অনেকে কথা দিয়েছে রাস্তা করে দিবে কিন্তু কেউ কথা রাখেনি।

তারা বলেন, নলডাঙ্গা-শেরকোল সড়কের রায়সিংহপুর পূর্বপাড়ার অবস্থা এতটাই করুণ যে, বর্ষা মৌসুমে পানিতে একাকার হয়ে যায়। যানবাহন তো দূরের কথা, নৌকা ছাড়া চলাচল সম্ভব হয় না।

তারা আরও বলেন, ছেলের ভালো চাকরি থাকলেও কিংবা মেয়েরা গুণে গুণান্বিত হলেও বিয়ে হচ্ছে না। কারণ পাত্র বা পাত্রীপক্ষ রাজি হচ্ছে না এই গ্রামে আসতে। এ কারণে বিয়ের আগেই ভেঙে যাচ্ছে সম্বন্ধ।

শুধু বিয়ে নয়, রাস্তার কারণে শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবাও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কোনো রোগী অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স তো দূরের কথা, রিকশা-ভ্যানও পৌঁছায় না গ্রামে। রোগীকে খাটিয়ায় করে বহন করতে হয়। বৃষ্টির দিনে দুর্ভোগ আরও চরমে ওঠে। মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই মানুষকে চলাচল করতে হয়।

শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া-আসা হয়ে উঠেছে দুঃস্বপ্নের মতো। সকালে স্কুলে রওনা হলেই পানিতে পড়ে গিয়ে ভিজে যায় বই-খাতা ও ইউনিফর্ম। এতে অনেকেই সময়মতো ক্লাসে পৌঁছাতে পারে না। পড়ালেখা ব্যাহত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।

কৃষকদের দাবি, রাস্তা না থাকার কারণে সময়মতো ফসল বাজারজাত করতে না পারায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বর্ষা মৌসুমে পানি মাড়িয়ে চলাচল করা আমাদের জন্য চরম কষ্টের। পানি সরে গেলেও রাস্তা কাদা হয়ে যায়। ছেলে-মেয়েদের স্কুল-কলেজে যেতে কষ্ট হয়, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হলে কোলে বা খাটিয়ায় করে নিতে হয়। রাস্তার বিষয়ে অনেকবার চেয়ারম্যান, মেম্বারদের কাছে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। কথা দিয়ে কিন্তু কেউ কথা রাখেনি। আজও আমাদের এলাকার বাস্তব কোনো উন্নয়ন হয়নি। এই রাস্তাটি হলে মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হবে।

নলডাঙ্গা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. হাসিবুল হাসান কালবেলাকে বলেন, আগামী বরাদ্দ আসলে আমরা রাস্তাটি করে দেব। আশা করছি, খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডাকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

ঘুম থেকে উঠেই বিছানা পরিষ্কার করা ভালো নাকি খারাপ, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

নৌ-পুলিশের অচল স্পিডবোটের জন্য বরাদ্দ ২০০ লিটার তেল!

‘আমি নাকি গে!’ গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন অক্ষয় কুমার

আড়াই ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন চলাচল শুরু

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের পরীক্ষায় জালিয়াতি, প্রতারক গ্রেপ্তার 

মুন্সীগঞ্জে একদিনেই মিলল তিন মরদেহ

ছাত্র মজলিসের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রহমত আলী আটক

বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

অপহরণ মামলায় টাকা নেওয়ার অভিযোগে আশুলিয়ার এসআই ক্লোজড

১০

ইন্দোনেশিয়ার উত্তাল পরিস্থিতিতেই সব আরোহী নিয়ে নিখোঁজ হেলিকপ্টার

১১

মেয়াদ উত্তীর্ণ সার্জিক্যাল পণ্য রাখায় তিন ফার্মেসিকে জরিমানা

১২

১০ বিচারকের বদলির আদেশ

১৩

ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর মতো কোনো শক্তি নাই : দুদু

১৪

জাতীয় পার্টির প্রেস সেক্রেটারির পদত্যাগ

১৫

সাভারে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দুস্থ-অসুস্থদের আর্থিক সহায়তা

১৬

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতা রিমান্ডে 

১৭

সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে খেপিয়ে তুলতে আ.লীগের কৌশল, দায়িত্বে পুতুল

১৮

নাসুমের স্পিন ঘূর্ণিতে ১০৩ রানে অলআউট নেদারল্যান্ডস

১৯

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন জবি শিক্ষার্থীরা

২০
X