রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) যে মঞ্চে কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল, সেটি শেষ পর্যন্ত ফাঁকাই পড়েছিল। এর আগের দিন দলটির দুগ্রুপের সংঘর্ষের পর প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করায় বাতিল হয়ে যায় কর্মসূচি।
মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা সদরের ডাইংপাড়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষ হয়। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো উপজেলা সদরে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় মামলা করেন। মামলায় পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা সদরে একই স্থানে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএনপির দুই গ্রুপ। সকাল থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল এলাকায়। বিকেল চারটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দীনের নেতৃত্বাধীন গ্রুপের অন্তত সাতজন আহত হন। এর মধ্যে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি নাসির উদ্দিন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানা এবং পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান বিপ্লব রয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমেদ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেন। বুধবার দুপুরে সেনাবাহিনীও টহল দেয় এলাকায়।
সংঘর্ষের কারণ জানতে চাইলে অপর গ্রুপের নেতা, উপজেলা বিএনপির সদস্য সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারী ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘দুপক্ষ যদি আলাদা স্থানে অনুষ্ঠান করত তাহলে কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু শরীফ উদ্দীনের গ্রুপ দলীয় কার্যালয়ের সামনেই অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিল। আমরা ইউএনও অফিসে আপত্তি জানিয়েছিলাম। পরে খবর পাই, তারা আমাদের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছে। তখনই সংঘর্ষ বাঁধে।’
অন্যদিকে শরীফ উদ্দীনের সমর্থক ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মঞ্চ তৈরি করছিলাম। সোমবার (০১ সেপ্টেম্বর) কাজ চলার সময় সুলতানুলের পক্ষ এসে বাধা দেয়। মঙ্গলবারও একইভাবে বাধা দেয় এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।’
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কোনো ধরনের অপতৎপরতা ঠেকাতে আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। মামলাটি রেকর্ড হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন