প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু হওয়ার সাত বছর পার হলেও কুমিল্লার লালমাই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ড অফিসের জন্য এখনো কোনো সরকারি গাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ফলে ভূমি অফিসের পরিদর্শন, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, বাজার মনিটরিং, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ নানা সরকারি কার্যক্রমে ভাড়া করা গাড়ির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে এসিল্যান্ড অফিসকে। এতে করে সাধারণ নাগরিক সেবায় ভোগান্তি বাড়ছে।
২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লার ১৭তম উপজেলা লালমাই। ১৪৭.০৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। নামকরণ হয়েছে লালমাই পাহাড়ের নামানুসারে। ২০১৮ সালে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়। তবে এত বছর পার হলেও উপজেলা ভূমি অফিসের জন্য কোনো সরকারি গাড়ি বরাদ্দ না থাকাটা অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন স্থানীয় সুশীল সমাজ ও জনপ্রতিনিধিরা।
স্থানীয়রা জানান, লালমাই উপজেলা প্রতিষ্ঠার আট বছরেও এসিল্যান্ড অফিস সরকারি গাড়ি না পাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। এটাও এক ধরনের অবহেলা। গুরুত্ব বিবেচনায় এই উপজেলার এসিল্যান্ড অফিসের জন্য সরকারি গাড়ি বরাদ্দ দেওয়া শুধু সময়ের দাবি নয়, নাগরিক সেবার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যও জরুরি।
লালমাই প্রেস ক্লাবের সভাপতি ড. শাহজাহান মজুমদার বলেন, লালমাই একটি বিস্তীর্ণ উপজেলা। এখানে এসিল্যান্ডদের ভ্রাম্যমাণ আদালত, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, সরকারি জমি উদ্ধার, মাদক ও দুর্নীতি প্রতিরোধ থেকে শুরু করে পাবলিক পরীক্ষা তদারকি পর্যন্ত করতে হয়। অথচ এত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের জন্য তাদের কোনো সরকারি গাড়ি নেই। দীর্ঘদিন ধরে হাইস বা মাইক্রোবাস ভাড়া করে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এটি সময় ও অর্থের অপচয়। তাই দ্রুত সরকারি গাড়ি বরাদ্দ দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন আক্তার শিফা বলেন, আমি মাত্র এক মাস হলো যোগদান করেছি। এসে জেনেছি এখানে এসিল্যান্ডের জন্য কোনো সরকারি গাড়ি নেই। ফলে জরুরি তদারকি ও পরিদর্শনের সময় ভাড়া গাড়ির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। অনেক সময় এসব গাড়ি সঠিক সময়ে পাওয়া যায় না। সরকারি গাড়ি থাকলে ভূমি ব্যবস্থাপনার কাজগুলো আরও গতিশীলভাবে করা সম্ভব হতো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা কালবেলাকে বলেন, ভূমি অফিসের কাজ বেশিরভাগই মাঠনির্ভর। নামজারি, খাজনা আদায়, খাস জমি বন্দোবস্ত, উচ্ছেদ কার্যক্রম থেকে শুরু করে জনগণের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি এসব কাজের জন্য এসিল্যান্ডকে নিয়মিত মাঠে যেতে হয়। সরকারি গাড়ি না থাকায় অনেক সময় ভাড়ার গাড়ি ব্যবহার করতে হচ্ছে, যা কার্যক্রমে গতি কমিয়ে দিচ্ছে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, আমরা যথাযথ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাবাদী।
মন্তব্য করুন