ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ফরিদপুরের দুটি সংসদীয় আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ভাঙ্গা থানা উপজেলা পরিষদসহ সরকারি দপ্তরে নাশকতাকারীদের বিচারের দাবিতে ভাঙ্গায় শান্তি মিছিল করেছে উপজেলা বিএনপি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ভাঙ্গা বাজার বাসস্ট্যান্ডের সামনে থেকে এ মিছিলটি বের করা হয়।
এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিয়েছেন জেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী। মিছিলটি ভাঙ্গা বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ভাঙ্গা এক্সপ্রেস দক্ষিণপাড়া পর্যন্ত বিভিন্ন সড়ক অতিক্রম করে। পরে ভাঙ্গা বাজার বাসস্ট্যান্ডে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এ সময় সৈয়দ মোদাররেস আলি বলেন, শুরু থেকেই ভাঙ্গাবাসীর আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপি জড়িত ছিল এবং নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। বিষয়টি উচ্চ আদালতে যাওয়ার পর আমরা আন্দোলনে ছিলাম না। তবে এর মধ্যে ফ্যাসিস্টদের দোসররা ঢুকে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভাঙচুর করে এ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। আমরা এ ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, শুধু ভাঙ্গা উপজেলা ফরিদপুর পাঁচ নামে একটা সংসদীয় আসন ছিল। ২০০৮ সালে তৎকালীন ইসি ভাঙ্গা, সদরপুর এবং চরভদ্রাসন নিয়ে আসন গঠন করে ফরিদপুর-৪ নামে। এবং সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নটি ফরিদপুর দুই আসনের সাথে জুড়ে দেয় হয়। তখন থেকেই আমরা ফরিদপুরের ৫টি আসন ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলন করে আসছিলাম।
কিন্তু বর্তমান ইসি গত ৪ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গার দুটি ইউনিয়ন আলগী ও হামিরদী কেটে নগরকান্দা সালথা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-২ এর মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমরা অভিন্ন ভাঙ্গা চাই এবং আমাদের কেটে নেওয়ার দুটি ইউনিয়ন ভাঙ্গাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাই।
পাশাপাশি বলতে চাই ফরিদপুরের ৫টি আসন রক্ষার আমাদের যে আন্দোলন তা অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে হাইকোর্ট রিট করা হয়েছে। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আশা করি ওই দিন আমরা ন্যায়বিচার পাব।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে রাস্তায় নেই অবরোধকারীরা। এতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে সোমবার হামলার ঘটনায় ভাঙ্গা গোল চত্বরের আশেপাশের কোন দোকানপাট খুলতে দেখা যায়নি। মঙ্গলবার মহাসড়কে বিপুল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থান নিয়ে সড়কে টহল দিচ্ছে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার চৌরাস্তা মোড়ে পরিদর্শনে গিয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, সকাল থেকে অবরোধকারীরা রাস্তায় অবস্থান নেয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে। সড়কের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে সোমবার যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে তারা সহিংসতার উদ্দেশে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনের চিঠি দেয়া হয়েছে। ভাঙ্গার বিষয়টি বিস্তারিত জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত একটি সমাধান হবে। এ ছাড়া উচ্চ আদালতে একটি রিট করা হয়েছে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর সেখানে শুনানি হওয়ার কথা, সেখান থেকেও ভালো ফলাফল আসতে পারে।
মঙ্গলবার ঢাকার সঙ্গে ভাঙ্গা হয়ে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার সঙ্গে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকিবুজ্জামান। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের আশ্বাসের পর থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যানবাহনের চাপ কম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যান চলাচল বাড়বে বলে আশা করছি।
অন্যদিকে ভাঙ্গা রেল জংশনের মাস্টার শাকিব হোসেন জানান, আমাদের রেল চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
মন্তব্য করুন