নানা প্রলোভন দেখিয়ে একে একে ১৭ নারীকে বিয়ে করে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি করা সেই বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কবির হোসেন পাটোয়ারির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরিশাল মেট্রোপলিটন আমলি আদালতে নালিশি মামলা করা হয়। বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) হাফিজ আহমেদ বাবলু স্ব-প্রণোদিত হয়ে এ মামলা করেন।
আদালতের বিচারক সাদিক আহম্মেদ মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি আগামী ২০ নভেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
মামলার বাদী রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফিজ আহমেদ বাবলু বলেন, বিদেশে পড়াশোনা করানো, সরকারি চাকরি, সম্পত্তি দেওয়া, বিমানবালা পদে কাজ করার প্রলোভনে প্রতারণা করে আসছিলেন চাঁদপুরের মতলব উপজেলার বাসিন্দা বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কবির হোসেন।
তিনি আরও বলেন, কবির ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত থাকাকালীন ১৭টি বিয়ে ও বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিটি বিয়ের ক্ষেত্রে তিনি মুসলিম পরিবার আইনের ১৯৬১-এর ৬ ধারার বিধান লংঘন করে অধ্যাদেশ ৬ (৫)-এর (খ) ধারার অপরাধ সংঘটিত করেছেন। এ ছাড়া প্রথম বিয়ের পর তা গোপন রেখে এক এক করে ১৭টি বিয়ে করে তিনি ধর্মীয় মূল্যবোধ, দেশীয় সংস্কৃতি এবং আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে গুরুতর অপরাধ সংগঠিত করেছেন।
উল্লেখ্য, বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী ১৭ নারীকে বিয়ে করার অভিযোগে তার বিচার দাবিতে সম্প্রতি মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীরা। তাছাড়া আলোচিত বিয়ে পাগল এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বরিশাল নগরীর কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ে তার বিরুদ্ধে তদন্তে আসে মন্ত্রণালয়ের টিম। একই সময় কবির হোসেনের বিচার দাবিতে বন সংরক্ষণ কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা।
এ সময় ঢাকার বাসিন্দা নাজনিন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া, খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ ১৭ নারী তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া স্ত্রীরা জানান, সবশেষ চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনার চাকরিজীবী খাদিজা আক্তারকে বিয়ে করেন কবির। বিয়ের দ্বিতীয় দিনেই স্ত্রীকে বাবার বাড়ির অংশ লিখে দেওয়ার জন্য কবির চাপ প্রয়োগ করেন। লিখে না দেওয়ায় তাকে বন বিভাগের সরকারি কোয়ার্টার থেকে বের করে দেন কবির।
মন্তব্য করুন