খাগড়াছড়িতে মারমা শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার জেরে শুক্র ও শনিবারের সড়ক অবরোধ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সড়কে সড়কে জ্বালাও-পোড়াও ও সহিংসতার পর খাগড়াছড়িতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ও খাগড়াছড়ি পৌরসভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এখনো এ ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে।
রোববার সকালে থেকে খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এ ছাড়াও খাগড়াছড়িতে জেলা সদরে মোতায়েন করা হয়েছে সাত প্লাটুন বিজিবি। সকাল থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে চলাচলকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এদিকে বন্ধ রয়েছে শহরের দোকানপাট। সকাল থেকে জেলার কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ ও সহিংস পরিস্থিতির কারণে সাজেকে আটকে পড়া প্রায় দুই হাজারের বেশি পর্যটক সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় শনিবার রাত সাড়ে ১০টার পর খাগড়াছড়ি শহরে পৌঁছেছেন। পরে রাত ১২টার মধ্যে তারা নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে খাগড়াছড়ি ছেড়েছেন।
শনিবার জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ চলাকালে খাগড়াছড়ির মহাজনপাড়া ও সদর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় দুপক্ষের মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়। দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ২৩ জন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ জানমাল রক্ষায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন মো. ছাবের বলেন, দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ২৩ জন আহত হয়। এদের মধ্যে ২১ জন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছে। দুজন খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল কালবেলাকে বলেন, শনিবার দুপুরের পর উপজেলা ইউএনও সংলগ্ন এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ নিরাপত্তায় যৌথভাবে কাজ করছে। পরে সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে উত্তেজিত দুপক্ষকে আমরা সরিয়ে দিই। নতুন করে যাতে সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
মন্তব্য করুন