খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. শেখ বাহারুল আলম বাহারের বিরুদ্ধে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ তৈরির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (০৮ অক্টোবর) সকালে খুলনা প্রেস ক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন এপিসি ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও ডা. বাহারুলের মেয়ে শেখ তামান্না আলম।
এ সময় তার আরেক মেয়ে ডা. তাসনুভা আলম উপস্থিত ছিলেন।
অভিযুক্ত ডা. শেখ বাহারুল এপিসি ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান। তিনি আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার বর্তমান সভাপতি।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. শেখ বাহারুল আলম নিজ বাসা ও বিএমএ ভবন ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাজ করছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
শেখ তামান্না আলম বলেন, ‘আপনারা আমার বাসার আশপাশের খোঁজ নিয়ে দেখেন ডা. বাহার নিয়মিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিটিং করছেন এবং খুলনাতে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ তৈরির কার্যক্রম চালাচ্ছেন।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মা ডা. শামসুন্নাহার এ শহরের একজন স্বনামধন্য ডাক্তার ছিলেন। ১৯৮৯ সালে ১৩ নভেম্বর আমার মা মারা যাওয়ার সময় আমি এবং আমার ৭ বছরের ছোট বোনকে রেখে যান। তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। বাবার অনেক অন্যায় চোখের সামনে দেখেও ছোট বোনের কথা চিন্তা করে কোনো প্রতিবাদ করিনি।’
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘আজ এসব বিষয় এমন এক পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে এখন একজন অন্য ধর্মের নারী, তার স্বামী সংসারসহ শুধু অর্থের লোভে আমার বাবাকে আমাদের থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়েছে। ওই নারী আমাদের প্রতিষ্ঠানে ১৩০০ টাকা বেতনের একজন কর্মচারী ছিলো মাত্র। আজ আমার বাবার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ওই নারী একই প্রতিষ্ঠানের একজন পরিচালক হয়েছে।’
এর আগে, মাকে হত্যার অভিযোগে ডা. শেখ বাহারুল আলম বাহারের বিরুদ্ধে মামলা করেন মেয়ে তামান্না। গত ৯ সেপ্টেম্বর খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সোনাডাঙ্গা আমলি আদালতে মামলাটি করা হয়।
মামলার এজাহারে তামান্না অভিযোগ করেন, ১৯৮৯ সালের ১৩ নভেম্বর রাতের দিকে তৎকালীন খ্যাতনামা গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সামসুন্নাহার মিলনের গলায় রশি বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। ডা. শেখ বাহার তার স্ত্রী শামসুন্নাহারকে খুন করে সে সময় আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেন।
অভিযোগে তামান্না আলম আরও বলেন, রাজনৈতিক ও পেশাগত পরিচয়ে অত্যন্ত প্রভাবশালী বাবার পরকীয়া এবং নির্মম শারীরিক নির্যাতনে তার মায়ের মৃত্যু হয়।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রেমের সূত্রে বিয়ে হলেও পরবর্তীতে বাহারুল আলম একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ কারণে দাম্পত্য জীবনে কলহ দেখা দেয়। সামসুন্নাহার নির্যাতিত হতে থাকেন এবং দুই কন্যাকে অস্ট্রিয়ায় পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু মেয়েদের নিয়ে স্ত্রী বিদেশে যেতে পারবেন না— এমন আশঙ্কা থেকে বাহার তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন।
মন্তব্য করুন