বগুড়ার শেরপুরে একটি বালিকা বিদ্যালয়ে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড চাওয়া কেন্দ্র করে দুই শিক্ষকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেকে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস না করে বাড়িতে চলে যায়।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে শেরপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাহেব আলী অভিযোগ করেন, বিগত সময় তিনি কখনো বিদ্যালয়ের ওয়াইফাই ব্যবহার করেননি। সেদিন প্রয়োজন হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে তিনি ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর মাহমুদুল হাসান শিমুলের কাছে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড চান। কিন্তু মাহমুদুল হাসান পাসওয়ার্ড না দেওয়ার জন্য টালবাহানা ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং তর্কাতর্কির একপর্যায়ে তাকে মারধর করেন। এরপর বহিরাগত কয়েকজন বিদ্যালয়ে এসে তার ওপর হামলা চালায় এবং দোতলা থেকে মারতে মারতে নিচতলা নামায়। বর্তমানে আহত হয়ে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুস্থ হয়ে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
অন্যদিকে মাহমুদুল হাসান শিমুল কালবেলাকে জানান, সাহেব আলী তার কাছে পাসওয়ার্ড চান এবং ব্লাক বোর্ডে পাসওয়ার্ড লিখে দিতে বলেন। সে সময় তিনি প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া তা করতে রাজি না হওয়ায় সাহেব আলী তাকে গালিগালাজ শুরু করেন এবং তাকে একপর্যায়ে মারধরের চেষ্টা করেন। পরে তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষকরে রুমে গিয়ে বিচার চেয়ে ঘটনার বিবরণ বলতে লাগলে সাহব আলী সেখানে গিয়েও অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করেন এবং সবার সামনে তাকে মারেন। পরে আহত হয়ে সে তার পরিবারকে খবর দেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, শিক্ষক সাহেব আলী এর আগেও অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে এ রকম অসৌজন্যমূলক আচরণ ও মারামারির ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক মোজাফফর আলী কালবেলাকে বলেন, ‘পাশের স্টাফ রুম থেকে প্রথমে মাহমুদুল হাসান শিমুল চিল্লাচিল্লি করতে করতে তার রুমে প্রবেশ করেন এবং তাকে মারধর করা হয়েছে বলে বিচার চান। ওই সময়ই আরেক শিক্ষক সাহেব আলীও রুমে প্রবেশ করেন এবং তাকে আগে মারধর করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন। একপর্যায়ে আবারও তর্কাতর্কি ও হাতাহাতির পর্যায় সৃষ্টি হয়। ঘটনায় কিছুক্ষণ পরে বহিরাগত কয়েকজনের প্রবেশ করলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ শেখ বলেন, ‘উত্তেজনা পরিস্থিতিতে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ বিদ্যালয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন কালবেলাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে এখনো কোনো পক্ষ এ বিষয়ে অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন