বরিশালের বাকেরগঞ্জে কবাই ইউনিয়নে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুতে উঠতে হয় মই দিয়ে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, উপজেলার কবাই ইউনিয়নের শিয়ালঘুনি খালের উপর ১ কোটি ২ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু এখন কোনো কাজে আসছে না। সেতুটির দুই পাশ দিয়ে এলাকাবাসী ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে হয় বাঁশ-কাঠের তৈরি মই দিয়ে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অধীনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ রাস্তায় সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০২৪ সালের মে মাসে নির্মাণকাজ শুরু করেন এস এম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
৬ মাস মেয়াদে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও এক বছর অতিবাহিত হলেও সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করেনি ঠিকাদার। এমন কি সেতু নির্মাণের সময় খালের দুইপাশে বাঁধ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত সেই বাঁধ অপসারণ করা হয়নি ওই খাল দিয়ে নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, নির্মিত সেতুর দুই পাশে সংযোগ রাস্তা না থাকায় তারা কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর সুফল পাচ্ছেন না। স্থানীয়রা সেতুটি দিয়ে চলাচলের জন্য বাঁশ ও কাঠ দিয়ে মই তৈরি করে চলাফেরা করছেন। দীর্ঘদিন থেকে নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে ওইসব এলাকার স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ বয়স্ক ব্যক্তিরা। মই দিয়ে সেতু পারাপারে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারীরা।
কবাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, সেতু নির্মাণের এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও দুইপাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নির্মিত এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন তিন গ্রামের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে বাঁশ কাঠের তৈরি মই বেয়ে সেতু পারাপার হতে হয়। ফলে সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর সুফল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তপেক্ষ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে এস এম এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার আল আমিন মিরাজ বলেন, বৃষ্টির কারণে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেতুর অবশিষ্ট কাজ শেষ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঠিকাদার সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেনি। খালে দুটি বাঁধ নির্মাণ করেছিল সে বাঁধ দুটি অপসারণ করেনি। ঠিকাদারকে বারবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কাজ শেষ করার জন্য। কাজ শেষ না করলে তার ফাইনাল বিল দেওয়া হবে না।
মন্তব্য করুন