কুমিল্লার দেবিদ্বারে কবিরাজের কাছে ছোট বোনের ‘জিন ছাড়াতে’ গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত কবিরাজ কুদ্দুস মিয়া উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের জিলানীর ছেলে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ জুন সকালে ছোট বোনের জিন ছাড়াতে কুদ্দুস কবিরাজের বাড়িতে নিয়ে যান ওই গৃহবধূ। চিকিৎসার একপর্যায়ে কুদ্দুস মিয়া নানা কৌশলে গৃহবধূকে নিজের বসতঘরের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। পরে ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে রাখে।
পরবর্তীতে ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে গৃহবধূর কাছ থেকে প্রায় এক লাখ পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় কুদ্দুস মিয়া। দীর্ঘদিন ধরে ভিডিও প্রকাশের হুমকি দিয়ে একাধিকবার গৃহবধূর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। সম্প্রতি মোটা অঙ্কের টাকা দাবির পর গৃহবধূ তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে দেয়।
গৃহবধূ সাংবাদিকদের বলেন, আমি আমার ছোট বোনকে জিন ছাড়াতে নিয়ে যাই কবিরাজ কুদ্দুসের কাছে। চিকিৎসা শুরুর আগে সে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নেয়। পরে আমাকে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে। সেই ভিডিও দেখিয়ে টাকার দাবিও করে। আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা এনে দিলেও সে আমাকে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। পরে আমার ভাইকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে আরও তিন লাখ টাকা নেয়। টাকা ফেরত চাইলে ভিডিও ফাঁসের হুমকি দিয়ে আরও টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমার স্বামীর বাড়ির লোকদের কাছে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়।
গৃহবধূর মা বলেন, ভণ্ড কবিরাজের ফাঁদে পড়ে আমার মেয়ের পরিবার ভেঙে গেছে। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কবিরাজ কুদ্দুস মিয়া বলেন, তাদের এক মেয়ে অসুস্থ ছিল, আমার কাছে চিকিৎসা করিয়েছে। কিন্তু দুই মাস আগে তারা এমন একটি অভিযোগ নিয়ে আমাদের গ্রামে আসে, তখন আমি কক্সবাজারে ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে আনা ধর্ষণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
দেবিদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন বলেন, ভিকটিমের মায়ের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন