

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কাদিবাড়ি গ্রামের জলিলুর রহমান জলিল ও আঞ্জুয়ারা বেগম দম্পতি। ৪৫ বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তারা। উদ্দেশ্য ছিল সুখে-দুঃখে সারাজীবন এক সঙ্গে কাটাবে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকবে একে অপরের পাশে।
তাদের দুজনের সেই ইচ্ছেই যেন পূরণ হয়েছে। স্ত্রীর মৃত্যুর ১১ ঘণ্টা পরই মারা গেলেন স্বামী। এ মৃত্যু যেন দেখিয়ে দিল, সত্যিকারের ভালোবাসার সমাপ্তি কেবল একসঙ্গে পথচলাতেই হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জলিলুর রহমান জলিল মাস্টার (৭৫) ও তার স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম (৬৫) দীর্ঘ ৪৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে ছিলেন একে অপরের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তারা ছিলেন পরস্পরের ছায়া, পরস্পরের ভরসা।
কিন্তু হঠাৎই সেই ছায়া সরে যায়। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আঞ্জুয়ারা বেগম। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে গভীর শোকে ভেঙে পড়েন স্বামী জলিল মাস্টার। বিকেল থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাতে তাকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টা ২৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাদের ভালোবাসা ছিল সত্যিকার। একে অপর ছাড়া তারা কখনো বাঁচতে পারতেন না। তাই হয়তো একজন চলে যাওয়ার পর আরেকজনও থাকতে পারেননি। জীবনভর পাশাপাশি থেকেছেন, মৃত্যুতেও একসঙ্গে রয়ে গেলেন। একই পরিবারের দুই মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে যায় গ্রামবাসী।
জলিল মাস্টার ও আঞ্জুয়ারা বেগম দম্পতির ছোট ছেলে মো. রাকিবুল হাসান রকি বলেন, মা-বাবাকে একসঙ্গে হারিয়ে এতিম হয়ে গেছি। মা হঠাৎই মারা যান। বাবা হালকা অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ভীষণ ভেঙে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর বাবাও চলে গেলেন।
মন্তব্য করুন