

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। গণভোট ও ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ হবে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে খুলনার ডুমুরিয়ার উপজেলার স্বাধীনতা চত্বরে অনুষ্ঠিত হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতের ডুমুরিয়া উপজেলা সনাতন শাখার উদ্যোগে হিন্দুদের সম্মানে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার বলেন, স্বাধীনতার পর এ দেশের হিন্দুদের সব রাজনৈতিক দলগুলো ব্যবহার করে নিজেদের ফায়দা হাসিল করেছে। এখন হিন্দুদের স্লোগান একটাই সব মার্কা দেখা শেষ- দাঁড়িপাল্লার বাংলাদেশ। বাংলাদেশে হিন্দুদের নিয়ে এখন আর রাজনীতি করার সুযোগ আর নেই। হিন্দুদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, হিন্দুরাও এখন দাঁড়িপাল্লার পক্ষে এক হয়েছে।
তিনি বলেন, জামায়াত দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদার দাফন করা হবে। দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। আমরা লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি আছে, সেটি হচ্ছে জামায়াতের দাঁড়িপাল্লা। দেড় হাজার জীবন, ৪০ হাজার আহত হওয়ার মধ্য দিয়ে, চব্বিশের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ঢাবি, চবি, রাবি, জাবিসহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনেও সেই বার্তা দেশবাসী দেখাবে ইনশাআল্লাহ।
সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, যারা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে হিন্দুদের ভয় ও হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে এবার হিন্দুরা ভয় পাবে না। হিন্দুদের কেউ বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। যারা ৫৪ বছর দেশ চালিয়েছে তারা মাস্তান, দখলদার, চাঁদাবাজ ও সরকারের সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করে হিন্দুদের শোষণ করেছে। স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে। এবার হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামী সরকার।
ডুমুরিয়া উপজেলা সনাতন শাখার সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক এই স্লোগানে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে নির্বাচিত করতে হবে।
এদিন হিন্দু সম্মেলনকে ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল আসতে থাকে। বাদ্যযন্ত্র সহকারে আসা এসব মিছিলে হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ ও যুবকরা অংশ নেন। সম্মেলন শেষে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা হিন্দু কমিটির সেক্রেটারি অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ মণ্ডলের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রমত গাইন, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সহসভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি ডা. হরিদাস মণ্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রভাষক প্রশান্ত কুমার মণ্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মণ্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ডুমুরিয়া সার্বজনীন পূজা মন্দিরের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আপোষ সিংহ, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ন রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন তন্ময় মন্ডল সভাপতি, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।
মন্তব্য করুন