

ময়মনসিংহের ত্রিশালে সাবেক এক ছাত্রদল নেতাকে হাতকড়া পরিয়ে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছে ভুয়া গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তার ডাক-চিৎকারে এলাকাবাসী জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে উপজেলার গফাকুঁড়ি বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম নোমান বুধবার রাত ১০টার দিকে গফাকুঁড়ি বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় পথরোধ করে তাকে দাঁড় করায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ৫ সদস্য। ঝটপট তার হাতে পড়ানো হয় হাতকড়া। পাঁচজনের মধ্যে দুজন তাকে মারধর করতে করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল নির্জন মাঠের দিকে। গাড়িতে না উঠিয়ে তার কপালে ছুরিকাঘাত ও মারধর করতে করতে যখন তাকে নির্জন মাঠের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন ওই যুবকের মনে সন্দেহ জাগে। এসময় তার ডাক-চিৎকারে ঘটনাস্থলে জড়ো হতে থাকে এলাকাবাসী। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় ভুয়া ডিবি পুলিশ।
পরে আহত ছাত্রদল নেতার বড়ভাই এনামুল করিম ফরহাদ ময়মনসিংহ জেলা ডিবি পুলিশ ও ত্রিশাল থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, ডিবি পুলিশের কোনো ফোর্স কোনো অভিযানে বের হয়নি। হাতকড়া পড়াবস্থায় আহত ছাত্রদল নেতা নোমানকে চিকিৎসার জন্য ত্রিশাল সদরে নিয়ে আসলে ভুয়া ডিবি পুলিশের পড়ানো ওই হাতকড়া খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন থানা পুলিশ। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা হাতকড়াটি কেটে দেন। এরপর ওই আহত ছাত্রদল নেতাকে ভর্তি করা হয় ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
এদিকে হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে মিলেছে একটি খেলনা পিস্তল। ডিবি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, তাদের কোনো ফোর্স ত্রিশালে অভিযানে আসেনি।
ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতার বড়ভাই এনামুল করিম ফরহাদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। তাদের কাছে জানতে চাই আমার ভাইয়ের কি অপরাধ? কেন ধরেছেন? মারছেন কেন? আপনাদের কাছে কোনো ওয়ারেন্ট ইস্যু আছে কিনা? অস্ত্র আর ওয়াকিটকি কোথায়? এরপর তারা উত্তর দিচ্ছি বলে দৌড়ে তাদের বহন করা সিএনজি যোগে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
আহত ছাত্রদল নেতা নোমান বলেন, ত্রিশাল আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে ২৮ নভেম্বর কাফনের কাপড় পড়ে মিছিল করেছিলাম। ওই ঘটনার জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটতে পারে।
ত্রিশাল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সাদিকুর রহমান বলেন, ত্রিশাল থানা পুলিশ হাতকড়াটি কেটে দিতে বলায়, আমরা কেটে দেই।
এ বিষয়ে ত্রিশাল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। এখনো মামলা হয়নি, তবে ভুয়া ডিবি পুলিশ কিনা তা তদন্ত করে দেখা হবে।
মন্তব্য করুন