

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বেলতলী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভাজকে লাগানো অর্ধশত বকুলগাছ কেটে ফেলার ঘটনায় মো. আজমির হোসেন নামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাতে বেলতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মো. আজমির হোসেন (৩৭) কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার সাওড়াতলী গ্রামের বাসিন্দা। তবে তিনি বেলতলী এলাকায় উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ১০০ শয্যাবিশিষ্ট শিশু হাসপাতালের ফটকের পাশে থাকেন। সেখানে চা-বিস্কুট বিক্রি করেন। তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
জানা যায়, কেটে ফেলা বকুল গাছগুলো মহাসড়কের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো হয়েছিল সওজের উদ্যোগে। প্রতিটি গাছের বয়স ছিল ৯ বছরের বেশি। গাছগুলো কেটে ফেলায় ব্যাপক সমালোচনা হয়। পরে এ ঘটনায় সওজ মামলা দিলে শনিবার রাতেই কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পুলিশ আজমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
অভিযুক্ত আজমির হোসেন জানান, বিভাজকের গাছগুলো আবর্জনার মতো লাগে, কোনো কাজে আসে না। তাই সেগুলো তিনি কেটে ফেলেছেন।
কুমিল্লা সওজের সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্যসহকারী রুহুল আমিন বাদী হয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় মামলাটি করেন। তিনি বলেন, বেলতলীতে হাসপাতালের সামনেই একসঙ্গে ১৭টি বকুলগাছ কাটা হয়েছে।
সওজ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা কালবেলাকে জানিয়েছেন, যেসব স্থানে গাছগুলো কাটা হয়েছে, পরে সেখানে নতুন করে গাছ রোপণ করা হবে।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম কালবেলাকে বলেন, রোববার তাকে কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মহাসড়কটি ২০১৬ সালে চার লেনে রূপান্তর করার পর সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি এক লেনের গাড়ির হেডলাইটের আলো যাতে অন্য লেনের গাড়ির ওপর না পড়ে, সে জন্য বিভাজকের ওপর রোপণ করা হয়েছিল বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত প্রায় ১৯২ কিলোমিটার এলাকায় মধ্যে মহাসড়কের প্রায় ১৪৩ কিলোমিটার এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে। তার মধ্যে আছে বকুল, কাঞ্চন, করবী, গন্ধরাজ, রাধাচূড়া, হৈমন্তী, টগর, সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, কদম, পলাশসহ নানা ফুলের গাছ।
এ রকম ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে ৫০ হাজারের বেশি। এ ছাড়া সড়কের পাশে এবং বিভিন্ন স্থানে বিভাজকের ওপর লাগানো হয়েছে জলপাই, অর্জুন, কাঁঠাল, মেহগনি, শিশু, আকাশমণি, নিম, একাশিয়া, হরীতকীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৪০ হাজারের বেশি গাছ। কুমিল্লার বেলতলী এলাকাটি বকুলগাছে সাজানো ছিল।
মন্তব্য করুন