

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রাম মৌজায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের জটিলতা নতুন করে চাপে ফেলেছে স্থানীয় কয়েকশ হতদরিদ্র পরিবারকে। সওজের পক্ষ থেকে উচ্ছেদের ঘোষণা ও মাইকিংয়ের পর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা।
এলাকায় বসবাসরত প্রায় ৪০০ পরিবার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে তাদের ‘মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয়’ রক্ষার আবেদন জানিয়েছেন।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিষ্ণুপদ পাল।
স্থানীয়দের দাবি, বাজারগ্রাম মৌজার প্রায় ২০০ বিঘা জমি ১৯৬৪-৬৫ সালে অধিগ্রহণ করলেও সওজ এখনো ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করেনি। ১৯৬২ সালের এসএ খতিয়ানে জমিটি তাদের পূর্বপুরুষদের নামে থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসতি গড়ে তুলেছেন তারা। মাঠ জরিপে (৩০ ধারা) তাদের নামেও রেকর্ড হয়েছিল বলে বাসিন্দাদের দাবি। তবে চূড়ান্ত বিআরএস খতিয়ানে অনেকের নাম বাদ পড়ে গেলে বিষয়টি নিয়ে ২০২২ সালে দেওয়ানি মামলা করেন কয়েকজন মালিক। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে এসব পরিবার শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করলেও কখনো উচ্ছেদ পদক্ষেপ নেননি সওজ কর্মকর্তারা। হঠাৎ করে উচ্ছেদের ঘোষণা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে এলাকার ছাত্রছাত্রীরা এখন বার্ষিক পরীক্ষায় ব্যস্ত, বৃদ্ধ ও অসহায় মানুষদের অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ইদ্রীস আলী স্মারকলিপিতে লেখেন, উন্নয়ন চাই, সড়ক চাই, কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত বসতভিটা ভেঙে নয়। যে জমিতে আমাদের পূর্বপুরুষদের কবর, যেখানে আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম বাস করছি, সেটি থেকে উচ্ছেদ করলে আমরা পথে বসব।
বাসিন্দাদের দাবি, সড়ক নির্মাণের জন্য যতটুকু জায়গা প্রয়োজন শুধু ততটুকু নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিতে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ জরুরি। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কাউকে উচ্ছেদ না করার দাবি জানান তারা।
স্মারকলিপির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সওজের প্রধান প্রকৌশলী, সাতক্ষীরা সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, স্মারকলিপি হাতে পেয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন