অতি বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যার পানি নেমে গেলেও লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ৪টি গ্রামের কৃষিজমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জমিতে চাষাবাদ না করতে পারায় তিন শতাধিক চাষির এখন হাহাকার অবস্থা। খাসজমি দখল করে প্রভাবশালীরা মাছচাষ করায় বন্ধ হয়েছে পানি নিষ্কাশন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কৃষকরা জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ বরাবর লিখিত অবেদন দিয়েছেন। তারা অবিলম্বে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।
পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বছরজুড়ে পানিতে তলিয়ে থাকে ৪টি গ্রামের ৬শ’ বিঘা কৃষিজমি। ফলে এখানকার কৃষকগণ জমিতে আমন, আউশ, বোরোসহ কোনো ফসলই ফলাতে পারছেন না তারা। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান চান ভুক্তভোগী তিন শতাধিক চাষি।
সরেজমিনে দেখা যায়, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের তালুক খুটামারা, কিসামাত খুটামারা, খাতাপাড়া ও পূর্ব দৈলজোড় গ্রামের তিন শতাধিক চাষি জলাবদ্ধতার কারণে তাদের নিজ জমিতে চাষাবাদ করতে পারছেন না। স্থানীয় কিছু ব্যক্তি ওই এলাকার সরকারি খাসজমি লিজ নিয়ে মাছচাষ করার ফলে বন্ধ হয়ে পড়েছে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সামান্য বৃষ্টি আর বন্যার কারণে এসব জমিতে পানি ঢুকে পড়ে। আর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ৬শ’ বিঘা কৃষিজমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চাষিরা কোনো চাষাবাদই করতে পারছেন না। অনেকেই আমন চাষ করলেও তা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ধানে দেখা দিয়েছে পচন। চাষাবাদ করতে না পেরে কৃষিনির্ভর এসব মানুষ কষ্টে দিনযাপন করছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল গফুর, শফিকুল ইসলাম, মহির উদ্দিন, ইসরাফিল, মিজানুর রহমান জানান, তাদের জমিতে আগে অনেক ভালো ফসল চাষ হতো। কিন্তু বর্তমানে জমিগুলো পানিতে ডুবে থাকায় এখন কোনো ফসল হচ্ছে না। আমরা কয়েকশ’ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা ক্ষতিপূরণ চাই।
এদিকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শতাধিক চাষি লিখিত অবেদন দিয়েছেন জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগে। অবিলম্বে আটকে যাওয়া পানি নিষ্কাশন ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি চাষিদের।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ হামিদুর রহমান জানান, জমিগুলোর পানি নিষ্কাশনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন