

রাজশাহীতে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় জেলার ৯টি উপজেলার ৭২টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে কাজ করছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২০ মাসে জেলায় ৬ হাজার ১৬৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৯৬৫টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে গ্রাম আদালত ব্যবস্থা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। সভার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্প।
মতবিনিময় সভায় বলা হয়েছে, নিষ্পত্তি হওয়া প্রায় ৬ হাজার মামলার মধ্যে নারী মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এক হাজার ৬৫১টি। এ প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে সাত কোটি ৬৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৯৩ টাকা এবং প্রায় এক হাজার ৫৭ শতক জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এ জমির আনুমানিক মূল্য প্রায় পাঁচ কোটি ২ লাখ টাকা। এই আদালতে অনাধিক তিন লাখ টাকা মূল্যমানের ফৌজদারি ও দেওয়ানি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে।
সভায় বক্তারা জানান, রাজশাহীতে গ্রাম আদালতবিষয়ক মতবিনিময় সভা গ্রাম আদালত কার্যকরভাবে পরিচালিত হলে উচ্চ আদালতের ওপর থেকে মামলা জট কমবে এবং বিচার প্রার্থীরা স্বল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে সঠিক বিচার পেতে সক্ষম হবেন। প্রচলিত আদালতে একটি মামলা দায়েরের পর বছরের পর বছর কেটে গেলেও চূড়ান্ত রায় পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এতে বিচারপ্রার্থীদের সময়, অর্থ, শ্রম- সবকিছুই অপচয় হয়। কিন্তু গ্রাম আদালত এ সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এখানে সর্বোচ্চ ১২০ দিনের মধ্যেই অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়। ফলে দীর্ঘসূত্রতা ও অযথা ভোগান্তি থেকে প্রান্তিক জনগণ মুক্তি পাবেন। এক্ষেত্রে গ্রাম আদালতকে আরও জনপ্রিয় করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিহার্য।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। তিনি বলেন, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যাতে কম সময় ও কম খরচে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে, সে জন্য গ্রাম আদালতের বিকল্প নেই। গণমাধ্যমের ইতিবাচক প্রচারণা এ বিষয়ে জনগণকে আরও সচেতন ও উৎসাহিত করবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. জাকিউল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন- গ্রাম আদালত প্রকল্পের জেলা ব্যবস্থাপক লুৎফর রহমান, ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মারুফ আহমেদ।
মন্তব্য করুন