গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ভূমধ্যসাগর থেকে প্রাণে বেঁচে লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন আশিক

ভুক্তভোগী আশিক মিনা। ছবি : সংগৃহীত
ভুক্তভোগী আশিক মিনা। ছবি : সংগৃহীত

অবৈধপথে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে ফেরার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন গোপালগঞ্জের যুবক আশিক মিনা। মুকসুদপুর উপজেলার পূর্ব লওখণ্ডা গ্রামের আশিক মিনা দালালের প্রলোভনে পড়ে উন্নত জীবনের আশায় গত ১৫ নভেম্বর লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

সে সময় মারা যান একই গ্রামের দুই যুবক, নিখোঁজ হয় আরও পাঁচজন। নিখোঁজ পাঁচ যুবকের মধ্যে প্রাণে বেঁচে আহত অবস্থায় দেশে ফেরেন আশিক মিনা। ভেঙে গিয়েছে তার এক হাত ও এক পা।

ভূমধ্যসাগর থেকে ফিরে আসা আশিক বলেন, দালালের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার আশায় প্রথমে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব যাই। সেখান থেকে মিসর হয়ে লিবিয়া। এক মাস থাকার পর গত ১৫ নভেম্বর লিবিয়ার সময় রাত ৮টার পরে আমি এবং আমাদের গ্রামের সাতজনসহ ৭০ বাংলাদেশি ও পাঁচ মিসরীয় নাগরিককে নিয়ে বোট রওয়ানা হয়।

তিনি আরও বলেন, ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ান কোস্টগার্ডের একটি জাহাজ আমাদের নৌকা লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি চালায় এবং পরে নৌকার মাঝখানে জাহাজ উঠিয়ে দেয়। এ সময় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় নৌকাটি এবং নৌকাতে থাকা যাত্রীরাও। দেশের মাটিতে আর কোনোদিন ফিরে আসব প্রিয়জনের মুখ দেখতে পারব ভাবিনি। আমার একটি হাত ও একটি পা ভেঙে গিয়েছে।

ভুক্তভোগী আশিকের মা রওশন আরা বেগম বলেন, আমার তিন ছেলের মধ্যে আশিক সবার ছোট। উন্নত জীবন যাপনের আশায় জমি বিক্রি ও ধারদেনা করে একই গ্রামের আকুব আলীর হাতে তুলে দিয়েছিলাম ২১ লাখ টাকা।

তিনি আরও বলেন, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বদরপাশা গ্রামের দুই ভাই এনামুল ও হযরত। দালাল চক্রের মূল হোতা আপন দুই ভাই ওই গ্রামের আকুব আলীর ছেলে। তার হাতেই টাকা দিয়েছিলাম। মূলত এ আকুব আলীর মাধ্যমেই গ্রামের সকল যুবকের অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার টাকার লেনদেন করা হয়।

রওশন আরা বেগম বলেন, কন্টাক্টকে উল্লেখ ছিল, আমার ছেলেকে ইতালি পৌঁছে দেবে, হঠাৎ একদিন খবর এলো সাগরে নৌকাডুবিতে আমার ছেলে নিখোঁজ। কয়েকদিন পরে লিবিয়ার একটি হাসপাতাল থেকে অন্য আরেকজনের মোবাইল দিয়ে আমার মেজো ছেলের কাছে ফোন করে আমার ছোট ছেলে, তখনই জানতে পারি যে আমার ছেলে জীবিত আছে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমার ছেলেকে আমার কোলে ফেরত পেয়েছি এটাই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি।

এ বিষয়ে জানতে আপন দুই ভাই এনামুল ও হযরতদের বাড়িতে গেলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

মুকসুদপুর থানার সিন্দিয়ারঘাট নৌ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বলেন, কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অপহৃত ৪ জেলে উদ্ধার, অস্ত্র-গোলাবারুদ জব্দ

মাছ-দুধ একসঙ্গে বা পরপর খেলে কি সত্যিই ক্ষতি হয়? জানুন

বাউল শিল্পী আবুল সরকারের জামিন নামঞ্জুর

দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান তারেক রহমানের

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন স্থগিত 

আরএনবির শীর্ষ দুই পদে ‘সমঝোতার’ রদবদল!

লন্ডনে পাঠানোর নামে প্রতারণা, স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার

আইসিসি থেকে শাস্তি পেল ভারতীয় ক্রিকেট দল

চোখ দেখেই বোঝা যায় থাইরয়েডের সমস্যা, যে লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হবেন

সুপেয় পানির তীব্র সংকটে চরআতাউরের বাসিন্দারা

১০

ঢাকার ‘৭ কলেজ’ নিয়ে ব্যাখ্যা দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

১১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ বৃত্তি নীতিমালা ২০২৫ অনুমোদিত

১২

রাশিয়ার হুমকি মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যের নতুন কৌশল উন্মোচন

১৩

অস্ট্রেলিয়া সফরে নতুন টেস্ট ভেন্যুর স্বাদ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ

১৪

কারখানার বিপুল আইসক্রিম ধ্বংস, ৭০ হাজার টাকা জরিমানা

১৫

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী-নেশাগ্রস্ত লোকের জায়গায় নেই : শেখ আব্দুল্লাহ

১৬

আমাদের চ্যালেঞ্জ নিজেদেরই মোকাবিলা করতে হবে : চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক

১৭

নিজ দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে সেলিম, পেলেন মনোনয়ন

১৮

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, আবেদন যেভাবে

১৯

খুবিতে নতুন উদ্যোক্তাদের দিনব্যাপী ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ট্রেনিং

২০
X