

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে নরসিংদী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, কৃষি উৎপাদন, সার, বীজ ও সেচ ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, নরসিংদীর সবচেয়ে বড় সমস্যা রায়পুরায় উপজেলা, এখানে সন্ত্রাসীদের আড্ডা অনেক বেশি এবং হাতিয়ার রয়েছে। এজন্য যৌথবাহিনীর সমম্বয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। বর্তমানে টেঁটা আপডেট হয়ে হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, একটি সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে বর্তমান সরকার। সাংবাদিকরা তাদের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করে যাচ্ছে বলেই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এতটা উন্নতি। সব সময় সঠিক সংবাদ পরিবেশন করলেই দেশবাসী লাভবান হয়। পার্শ্ববর্তী দেশের সাংবাদিকতায় চুন-কালি দিয়ে সঠিক সংবাদ তুলে ধরে আপনারা ধন্যবাদ পাওয়া যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
সাংবাদিকদের অনুরোধ করে তিনি বলেন, আপনারা সত্য নিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করবেন। বিশেষ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা। দুর্নীতি এবং মাদক যতদিন সমাজ থেকে নির্মূল করতে না পারব, ততদিন পর্যন্ত সমাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সু-সংগঠিত হচ্ছে এবং আরও হবে, চেষ্টা করে যাচ্ছি। আগামী নির্বাচনটা যেন সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর হয় এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। আগামী নির্বাচনে ভোটার-প্রার্থীর পাশাপাশি প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।
নরসিংদীতে সবজি ও ফল-ফলাদি উৎপাদনে চাষিদের ভূয়সী প্রশংসা করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, নরসিংদীর চাষিরা কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর পরিমাণ সবজি ও ফল-ফলাদি উৎপাদন করে এবং তা বেশির ভাগ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। শীতকালীন সবজি শেষ হয়ে যাবার পর গ্রীষ্মকালীন সবজি আসার জন্য প্রায় এক মাসের মতো একটি সময় থাকে। এই সময়টায় সবজির দাম বেড়ে যায়। আবার শীতের শেষ সময় সবজির দাম অনেক কমে যায়, যার কারণে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কৃষক যেন তার উৎপাদিত সবজিটা সংরক্ষণ করতে পারে এবং কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য আমরা মিনি কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করছি।
জেলখানা ও কারাগার পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, চব্বিশের ১৯ জুলাই নরসিংদী জেলা কারাগারে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হলে সব কয়েদি পালিয়ে যায়, অস্ত্র লুট হয়। পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের মধ্যে অনেকে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছে, আবার অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলখানায় লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে অনেক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেলখানায় আটক কয়েদিদের মধ্যে বেশিরভাগই মাদক মামলার আসামি। এই মাদক নির্মূলে কাজ করতে হবে। আর মাদক মামলার কয়েদিদের জন্য বিশেষ কারাগার গড়ে তোলা হবে। নির্বাচন নিয়ে জনগণের মতোই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ভাবনা রয়েছে, পাশাপাশি পুলিশের মনবল বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি। সেসঙ্গে পুলিশের প্রশিক্ষণের মান বৃদ্ধির তাগিদ দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন– কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, ৬২ বিজিবি গাজীপুর ব্যাটালিয়ন লে. কর্নেল ইকতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল-ফারুকসহ অনেকে।
মন্তব্য করুন