মজুরি প্রদানে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে করে আসা টানা পাঁচ দিনের আন্দোলনের বিরতি টেনে কাজে ফিরেছেন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে কাজে ফেরেন তারা। এর আগে মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে বুড়িমারী স্থলবন্দর পরিদর্শন ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে মতবিনিময় শেষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের বুড়িমারী শাখার সভাপতি সাজ্জাদ হোসেনকে ডেকে লোড আনলোডের কাজ শুরু করতে বলেন। দাবি পূরণে আলোচনার আশ্বাস পেয়ে কাজে ফিরেছেন শ্রমিকরা।
গত ১২ সেপ্টেম্বর হতে বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে পাঁচ দিন ধরে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রাখেন শ্রমিকরা। গত ১২ সেপ্টেম্বর শ্রমিকদের মজুরির টাকা না দেওয়া ও সাধারণ শ্রমিকদের কাজের সিরিয়াল দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক ও সরদার গ্রপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়লে ১৫ জন আহত হয়।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন থেকেই নিয়মিত মজুরি পাচ্ছেন না তারা। এর পাশাপাশি মজুরি না বাড়ায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে শ্রমিক পরিবারগুলো। এ অবস্থায় শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেও সমাধান না পেয়ে আন্দোলনের পথ বেছে নেন তারা।
শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি ৩ বছর পরপর সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার নিয়ম থাকলেও ২০০৯ সালের পরে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। ফলে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে দুর্নীতি করে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন অনেক শ্রমিক নেতা।’ লোড-আনলোডের ক্ষেত্রে ১ টাকা করে সংগঠনের শ্রমিকদের চিকিৎসা বাবদ রাখা হলেও এ পর্যন্ত কোনো শ্রমিক সে সুবিধা পায়নি।
শ্রমিক মাজিজুল ইসলামের ভাষ্য, কোনো সর্দারের বয়স বেশি হলে বা কেউ মৃত্যুবরণ করলে তাদের সন্তানকেই সর্দার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, যা নিয়মের বাইরে।
তবে বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সফর উদ্দিদের দাবি, শ্রমিক নেতারা দুর্নীতি করেন না। তিনি বলেন, শ্রমিকদের দাবি অনুয়ায়ী মুজুরি বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
মন্তব্য করুন