

স্বাস্থ্য সহকারীরা কর্মবিরতিতে থাকায় ময়মনসিংহের ভালুকায় ব্যাহত হচ্ছে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের টিকা দান কার্যক্রম। সপ্তাহের নির্ধারিত দিনে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু ও গর্ভবতী মাকে নিয়ে টিকা দিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন শতাধিক অভিভাবক। এতে, ভোগান্তিসহ অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ভালুকা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, টিকা দান কেন্দ্রটি তালা বদ্ধ। সপ্তাহের নির্ধারিত দিনে শিশুদের টিকা দিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন মায়েরা এবং গর্ভবী মাকে টিকা দিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন তাদের অভিভাবকরা।
ওই সময় শিশুকে টিকা দিতে না পেরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা থেকে চলে যাচ্ছিলেন উপজেলার মেদুয়ারী ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের নাহিদ হোসেনের স্ত্রী বিথি আক্তার। ওই সময় কথা হলে বিথি আক্তার জানান, তার কন্যা শিশু আফিদা আক্তারকে টিকা দেওয়ার জন্যে হাসপাতালে এসেছিলেন। কিন্তু এসে দেখেন টিকা দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি জানান, মাকে সাথে নিয়ে বাড়ি থেকে হাসপাতালে আসতে যেতে তার তিন শত টাকা খরচ হয়েছে। টিকা দিতে না পারায় তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মেয়েকে তো টিকা দিতেই হবে। এজন্য, আবারো তাকে আসতে হবে। একই কথা জানালেন ভালুকা সরকারি কলেজ এলাকায় শিশুকে টিকা দিতে আসা শারমিন আক্তারসহ কয়েকজন।
উপজেলার বান্দিয়া গ্রামের মো. কাজিম উদ্দিন জানান, তার গর্ভবতী মেয়েকে এক মাস আগে টিাকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছিলো। দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়ার সময় হয়েছে। মেয়েকে নিয়ে তিনি হাসপাতালে এসেছিলেন টিকা দেওয়ানোর জন্য। হাসপাতালে এসে দেখেন টিকা দেওয়ার কেন্দ্রটি তালাবন্ধ। এখানে কেউ নেই। টিকাদান কেন্দ্রটি কি কারণে বন্ধ এবং আবার কবে খোলা হবে, মেয়েকে তিনি কবে টিকা দেওয়াতে পারবেন, তাও তিনি জানতে পারেন নি। বাড়ি থেকে আসতে যেতে তার তিন শতাধিক টাকা খরচের পাশাপাশি যথেষ্ট সময়ও নষ্ট হয়েছে তার।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টিকাদান কেন্দ্রে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবার নির্ধারিত দিনে গড়ে ৭০-৮০ জন অভিবাবক তাদের শিশু ও গর্ভবতী নারীকে টিকা দেওয়ার জন্যে আসেন। তাছাড়া, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২৬৪টি টিকা কেন্দ্রে প্রতিমাসের নির্ধারিত দিনে একদিন করে প্রায় ৮০০ শিশু ও গর্ভবতী নারীকে টিকা দেওয়া হয়। কিন্তু উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারীরা তাদের ৬ দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতিতে থাকায় গত মাসের ২৯ তারিখ থেকে বন্ধ রয়েছে টিকাদান কার্যক্রম।
এ বিষয়ে কথা হলে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত একাধিক স্বাস্থ্য সহকারী বলেন, ‘ছয় দফা দাবি আদায়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা আন্দোলনে আছি এবং কর্মস্থলে উপস্থিত হয়ে কর্মবিরতিতে আছি। দাবি মেনে নিলেই কাজ শুরু করা হবে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি মানা না মানার বিষয়টি সরকারের। তিনি মানুষের ভোগান্তির দিক বিবেচনায় স্বাস্ব্য সহকারীদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন