কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চৌড়হার এলাকায় একটি বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের হাত-পা ও মুখ বেঁধে জিম্মি করে স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল ডাকাতি মামলায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের নেতা কুষ্টিয়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক জাকির হোসেনসহ ৯ জনের ১০ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম জনাকীর্ণ আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামিসহ অন্যান্য আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া জেলা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাড. রফিকুল ইসলাম লালন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন চৌড়হাস উপজেলা রোডের বাসিন্দা লালন সেখের ছেলে জাকির হোসেন (৪৬), একই এলাকার বাসিন্দা মোশারফ হোসেনের ছেলে উল্লাস (৪০), তৈমুর ইসলাম ওরফে বিপুল (৩৯), রফিকুল ইসলাম (পলাতক), মনির হোসেন ওরফে পিচ্ছি মনির (বন্দুকযুদ্ধে নিহত), সাগর ওরফে জাহাঙ্গীর (পলাতক), আনার ওরফে আনোয়ার (বন্দুকযুদ্ধে নিহত), মধু শিকদার (পলাতক) এবং সাত্তার ওরফে মশিউর রহমান (পলাতক)।
একই সাথে এই মামলার চার্জশিটভুক্ত ও বেকসুর খালাসপ্রাপ্তরা হলেন সুমন, রবিউল ইসলাম, ছলেমান ওরফে রানা এবং সোহেল রানা। তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীত প্রামাণ করতে পারেনি আদালতে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২১ জুলাই রাতে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মতিমিয়ার রেলগেট এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের বাড়িতে হানা দিয়ে প্রায় ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে অজ্ঞাত একটি ডাকাত দল। এ ঘটনায় আক্রান্ত ওই পরিবারের গৃহকর্ত্রী বেগম ফরিদা ইসলাম পরদিন ২২ জুলাই বাদী হয়ে কুষ্টিয়া সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ এনে মামলা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাড. রফিকুল ইসলাম লালন জানান, ‘কুষ্টিয়া সদর থানার এই ডাকাতি মামলাটি মূলত আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সংঘটিত একটি ডাকাতির ঘটনা ছিল। এ মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত ১২ জনের মধ্যে ৯ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। তাদের প্রত্যেকের পৃথকভাবে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সাজাভোগের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
তবে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মানব চাকীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে কালবেলাকে তিনি জানান, ‘ডাকাতি মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতার সাজা হওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। সাংগঠনিকভাবে এই মামলার রায়কে মোকাবিলা করতে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন