

বিএনপির চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনায় পৈতৃক বাড়িতে চার দিন চলবে কোরআন খতম। বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম মজুমদার এই কোরআন খতমের আয়োজন করেছেন।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় ফেনীর ফুলগাজী শ্রীপুর গ্রামে খালেদা জিয়ার পৈতৃক বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় খালেদা জিয়ার প্রতিষ্ঠিত ইস্কান্দারিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার অধ্যয়নরত হাফেজেরা কোরআন তেলাওয়াত করছেন। ঢাকা থেকে মৃত্যুর খবর শোনার পর কিছুক্ষণ পর পর মজুমদার বাড়ির মসজিদের মাইকে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। এ সময় এলাকায় এক শোকাবহ পরিবেশ দেখা যায়।
এছাড়া তার নিজ উপজেলা ফুলগাজীসহ ফেনী জেলার সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। স্থানীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগণ সকাল থেকেই এই বাড়িতে ভিড় করছেন।
বেগম খালেদা জিয়া ফেনী-১ আসন থেকে পাঁচবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তার বাবার নাম মরহুম ইস্কান্দার আলী মজুমদার, মায়ের নাম মরহুম তৈয়বা বেগম মজুমদার। তারা দুই ভাই তিন বোন।
বেগম খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন তিনি বারবার তার নিজ বাড়িতে এসেছেন। চাচাতো ভাই শামীম হোসেন মজুমদার বলেন, ‘সকালে বড় বোন খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা স্তব্ধ হয়ে পড়ি। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকে কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়। আগামী চার দিন এই বাড়িতে কোরআন খতম চলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মৃত্যুর সংবাদ গ্রামের মাইকে প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার লোকজন তার স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।’
খালেদা জিয়ার ভাতিজা তামিম মজুমদার বলেন, ‘আমরা অনেক আশা স্বপ্ন নিয়ে সোমবার ফুপুর মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলাম। আমাদের বিশ্বাস ছিল তিনি সুস্থ হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে আবার দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন। তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে আবার গ্রামের বাড়িতে আসবেন, আমরা সেই আশায় ছিলাম।’
এর আগে, মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান খালেদা জিয়া। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছিল। পরে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে উনার শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় বিদেশ নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন