সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তীব্র যানবাহন সংকটে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ

পুলিশের গাড়িগুলোর অধিকাংশই পুরোনো মডেলের, লক্কড়-ঝক্কড়। অনেক গাড়ি আবার ফিটনেসবিহীন। ছবি : কালবেলা
পুলিশের গাড়িগুলোর অধিকাংশই পুরোনো মডেলের, লক্কড়-ঝক্কড়। অনেক গাড়ি আবার ফিটনেসবিহীন। ছবি : কালবেলা

‘গত মাসে দুই বার আমার গাড়ি নিয়ে গেছে। পাঁচ দিনের জন্য পুলিশকে গাড়ি দিয়েছিলাম। এখন রাতে পুলিশ দেখলে ভয় লাগে, যদি আবার গাড়ি চেয়ে বসে, না দিয়ে পারব না’ চোখ-মুখে আতঙ্ক নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মহিউদ্দিন। পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক।

আগেও তার গাড়ি রিকুইজিশনে নিয়েছিল পুলিশ। তবে সম্প্রতি এর মাত্রা বেড়ে গেছে বলে জানান মহিউদ্দিন। একই কথা জানিয়েছেন মহিউদ্দিনের মতো আরও অনেকেই। তাদের অভিযোগ, কোনো পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই হুটহাট গাড়ি নিয়ে যায় পুলিশ। তারপর সেই গাড়ি রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার করে। এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘রিকুইজিশন’। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হোন চালকরা।

পর্যাপ্ত গাড়ি নেই চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের এমন অভিযোগ অনেক পুরোনো। সেই সংকট এখন আরও তীব্র হয়েছে। পুলিশের যে গাড়িগুলো আছে, তার অধিকাংশই পুরোনো মডেলের, লক্কড়-ঝক্কড়। অনেক গাড়ি আবার ফিটনেসবিহীন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের জন্যও নেই গাড়ি। তাই বাধ্য হয়ে আটকের গাড়ির ওপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হচ্ছে। নিয়মিত টহলে ব্যবহার করতে হচ্ছে রিকুইজিশন করা গাড়ি। এমনকি ব্যারাক থেকে আরেক স্থানে যাতায়াতের জন্যও ব্যবহার করতে হচ্ছে রিকুইজিশনের বাস।

প্রতিদিনের দায়িত্ব পালনে প্রতিদিনই কোনো না কোনো গাড়ি রিকুইজিশনে নিতে হচ্ছে থানা ও ট্রাফিক পুলিশকে। অনেকে আবার ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েই ডিউটি পালন ও অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।

এ সমস্যা সমাধানের জন্য একাধিকবার চিঠিও দেওয়া হয়েছে। এতে ৮ থেকে ১০ ডাবল কেবিন পিকআপ, দুটি মিনি ট্রাক, দুটি প্রিজনভ্যানসহ আরও বেশ কিছু প্রস্তাবনা রয়েছে। কিন্তু সেই চিঠির কোনো সুরাহা না হওয়ায় যানবাহন সংকট কমছে না বলে জানিয়েছেন বাহিনীর দায়িত্বশীলরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭৭ লাখ মানুষের বাস চট্টগ্রাম জেলায়। পুরো জেলায় পুলিশের ১৭টি থানা, ১০টি তদন্ত কেন্দ্র, ৮টি ফাঁড়ি, একটি স্থায়ী ক্যাম্পসহ একাধিক অস্থায়ী ক্যাম্প রয়েছে। তবে তাদের জন্য বরাদ্দ আছে মাত্র ৩৭টি ডাবল কেবিন, পাঁচটি সিঙ্গেল কেবিন গাড়ি।

এসব গাড়ির বড় অংশই আবার নিয়মিত টহল, আসামি গ্রেপ্তার, মামলা তদন্ত, আসামি ও মানি স্কটসহ বিভিন্ন জরুরি ডিউটি ও ভিআইপি প্রটোকলে নিয়োজিত। তাই পর্যাপ্ত গাড়ি না থাকায় দীর্ঘ মহাসড়কে দুর্ঘটনা, ডাকাতি, ছিনতাই এবং পাহাড়ি অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা সবসময় সম্ভব হয়ে উঠে না।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বিপিএম কালবেলাকে বলেন, ‘আয়তনের দিক থেকে চট্টগ্রাম বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা। যানবাহন অপ্রতুল থাকার কারণে এত বড় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় জেলা পুলিশকে। জেলার বিভিন্ন স্থানে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যেতে অনেকটা বেগ পেতে হয়।’

যানবাহন সংকট কমে গেলে পুলিশের অভিযান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আরও একধাপ এগিয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যে উপায়ে পেঁয়াজ কাটলে চোখের পানি ঝরবে না

‍‌‌‘রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নির্ভয়ে সংবাদ প্রকাশ করছে কালবেলা’

‘বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের মাধ্যমে কালবেলা জনগণের মুখপত্র হিসেবে কাজ করছে’

চমক রেখে ওয়ানডে দল ঘোষণা বাংলাদেশের

মেট্রোরেল চলাচলের নতুন সময়সূচি প্রকাশ

যশোর বোর্ডে ২০ প্রতিষ্ঠানে পাস করেনি কেউ

সাদ হত্যা মামলায় ছাত্রলীগ নেতা হাবিব গ্রেপ্তার

স্ত্রীসহ সাবের হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা 

উপদেষ্টাদের কল রেকর্ড কোনো ব্যক্তির কাছে থাকাটা ‘বেআইনি ও ব্লাকমেইলিং’ : রিজভী

জাতীয় বেতন স্কেল কবে থেকে, জানালেন শিক্ষা সচিব

১০

ময়মনসিংহে ১৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাস করেনি কেউ

১১

আবারও একসঙ্গে রাজ-মানজুর-রুমি

১২

রাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন

১৩

আর্জেন্টিনা-মরক্কো ফাইনাল কবে কোথায়

১৪

চট্টগ্রামে ফল বিপর্যয়, পাসের হার কমেছে ১৮ শতাংশ

১৫

এইচএসসির ফলাফল খারাপ হওয়ায় শিক্ষার্থীর কাণ্ড

১৬

জুলাই জাতীয় সনদে যা রয়েছে

১৭

শিক্ষকদের ‘মার্চ টু যমুনা’ নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

১৮

চট্টগ্রাম ইপিজেডে কারখানায় ভয়াবহ আগুন

১৯

বদলির পর সরকারি কোয়ার্টারের ‘দরজা-জানালা’ খুলে নিলেন গণপূর্ত কর্মকর্তা

২০
X