বরিশালের বাকেরগঞ্জে চুরির অপবাদে এক মাদ্রাসাছাত্রকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানোর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। অভিযুক্তদের নিকট থেকে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো অপরাধীদের পক্ষ নিয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ।
এ ঘটনায় নির্যাতিত মাদ্রাসাছাত্র নাহিদ হোসেন মুন্নার পিতা সাইফুল ইসলাম সবুজ আকন গত এক সপ্তাহ পূর্বে বাকেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগ দেওয়ার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো অপরাধীদের পক্ষাবলম্বন করায় নির্যাতিত শিক্ষার্থীর পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার দাঁড়িয়াল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের উত্তর কাজলাকাঠী গ্রামে সিরাজ হোসেন আকন ইউপি সদস্য পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আহত শিক্ষার্থীর বাবা সাইফুল ইসলাম সবুজ ও তার পরিবার ইউপি নির্বাচনে তার পক্ষে প্রচার-প্রচারণা না চালানোর কারণে দীর্ঘদিন থেকে আক্রোশ পোষণ করে আসছিলেন। বিগত কিছুদিন পূর্বে উত্তর কাজলাকাঠী গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ খানের পুত্র জুয়েল খানের ঘরে চুরি হয়। এ চুরির ঘটনায় অভিযুক্তরা সাজিম হোসেন নামের একজনকে আটক করে মারধর করে। চুরির সঙ্গে মাদ্রাসাছাত্র মুন্না জড়িত বলে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেয়।
একই গ্রামের মো. ফারুক হোসেন খানের পুত্র সুমন খান গত ২ অক্টোবর দুপুর ১টার সময় কথা আছে বলে মাদ্রাসাছাত্র মুন্নাকে জনৈক মোশারফ গাজীর খাল পাড়ে ডেকে নিয়ে আসে। এ সময় পূর্ব থেকে দা ও লাঠিসোঠা হাতে নিয়ে ওৎ পেতে থাকা কামরুল ইসলাম নেওয়াজ, সিরাজ হোসেন সবুজ আগুন, মো. জুয়েল খান ও মো. ফারুক হোসেন খান লেদুরা তাকে গাছের সঙ্গে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেন। এ খবর পেয়ে পুত্রকে বাঁচাতে তার পিতা সাইফুল ইসলাম আকন সবুজ বাঁচাতে এলে তাকেও পিটিয়ে আহত করে। আহত শিক্ষার্থী মুন্নার অবস্থার অবনতি হলে ৪ অক্টোবর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত শিক্ষার্থীর পিতা সাইফুল ইসলাম সবুজ জানান, এ ঘটনায় এক সপ্তাহ আগে তিনি বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোন মামলা নেয়নি। এমনকি থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য অভিযুক্তরা প্রতিনিয়ত তাদেরকে খুন জখমের হুমকি দিচ্ছে। এতে তিনি ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পরপর লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে ওসি (তদন্ত) মো. মোস্তফা অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে টাকার বিনিময়ে তাকে দফারফার প্রস্তাব দেয়। তার আচরণে পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
মন্তব্য করুন