খুলনা বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. সহিদ হোসেন মো. নূর আফজালের বিরুদ্ধে ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহারের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) তার বিরুদ্ধে খুলনা জেলা অফিসের উপসহকারী পরিচালক ওহিদুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। ডা. সহিদ বর্তমানে রাজশাহী বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে ডি-অর্থ ও এমএস ডিগ্রি অর্জন না করে তা প্রেসক্রিপশনে লিখে প্রতারণা, জাল জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, খুলনা পুলিশ হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. সহিদ নুর আফজালের বিরুদ্ধে ভুয়া এমএস ডিগ্রি এবং ডি অর্থ ডিগ্রি লিখে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। এ ছাড়া অপারেশনের নামে অনেক রোগীকে বিকলাঙ্গ করে ফেলার অভিযোগে দুদক চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন একাধিক ভুক্তভোগী। দুদক চেয়ারম্যান অভিযোগ আমলে নিয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল কর্তৃক তদন্তের অনুরোধ জানানো হয়। পরবর্তীতে বিএমডিসি ডা. সহিদ নুর আফজালের এমএস ও ডি-অর্থ ডিগ্রি ভুয়া এবং তিনি তা প্রতারণার জন্য ব্যবহার করেন মর্মে দুদককে লিখিতভাবে অবহিত করেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
ডা. সহিদ নুর আফজালের বিরুদ্ধে এর আগেও ব্যাপক অভিযোগ ওঠে। অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক না হয়েও দীর্ঘদিন প্রেসক্রিপশনে কখনো ডিপ্লোমা, কখনো এমএস, আবার কখনো উভয় ডিগ্রি ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে জুনে খুলনার ২৮ অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক মেট্রোপলিটন পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তিনি এমবিবিএস ছাড়া কখনো ডিপ্লোমা বা এমএস ডিগ্রি অর্জন করেননি। এমনকি বিএমডিসিতেও এমন কোনো ডিগ্রির উল্লেখ নেই। বহু বছর ধরেই তিনি এসব ডিগ্রি ব্যবহার করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।
নগরীর ন্যাশনাল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, গ্রিন লাইফ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অর্থোপেডিক্স রোগী দেখছেন। এতে বহু রোগী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ছেন। রোগী ধরতে তিনি আসাদ, দেবদূত, সুজন ও সুমন নামে কয়েকজন দালালকে ব্যবহার করেন। এ ছাড়া সরকারি চিকিৎসক হয়েও অনুমতি ছাড়া ন্যাশনাল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকানা গ্রহণ করেছেন। যা সরকারি চাকরিবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
ডিগ্রি জালিয়াতির পাশাপাশি ডা. নূর আফজালের বিরুদ্ধে গোপনে সরকারি ওষুধ বিক্রির অভিযোগও উঠেছে একাধিকবার। ২০০৭ সালে ওষুধ চুরির বিষয়ে গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনের ফলে তিন তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ওষুধ বিতরণে অনিয়মের বিষয়টি ফুটে উঠেছে।
মন্তব্য করুন