বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের দড়িচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা রাঢ়ীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দেওয়ায় এক ইউপি সদস্যকে কোপাতে যাওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকের ওই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে।
স্থানীয়রা জানায়, সকাল ৭টার দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা রাঢ়ী একটি ধারালো রামদা হাতে নিয়ে ইউপি সদস্য বাচ্চু দেওয়ানকে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায় ইউপি সদস্য সামনে পড়লে রামদা উঁচিয়ে চেয়ারম্যানকে কোপ দেওয়ার সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রতিহত করেন। মুহূর্তের মধ্যে সেই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একজন জনপ্রতিনিধি হাতে অস্ত্র নিয়ে মহড়া এবং কোপানোর চেষ্টার ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ওই ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে পরিষদের সব সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে।
ইউপি সদস্য বাচ্চু দেওয়ান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের দেওয়া কোপ লাগলে আমি দ্বি-খণ্ডিত হয়ে যেতাম। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আমিসহ পরিষদের ১০ সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন। যা লিখিত আকারে বরিশাল জেলা প্রশাসক এবং মেহেন্দিগঞ্জের ইউএনও বরাবর দিযেছি। আগামীকাল এ বিষয়ে সব সদস্যরা মিলে সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে। টের পেয়ে চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশে কোপ দেয়।
অপর ইউপি সদস্য শহীদ দেওয়ান বলেন, চেয়ারম্যান পরিষদে বসে মদ ও গাঁজা সেবন করেন। পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে টাকা আত্মসাৎ করার প্রতিবাদ করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করছেন। এ ছাড়াও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এলাকার মসজিদের ইমাম ও শিক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে। সরকারি চাল আত্মসাৎ করার অভিযোগসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এর আগে বহিষ্কৃতও হয়েছিলেন তিনি।
ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা রাঢ়ী বলেন, ইউপি সদস্য বাচ্চু দেওয়ানসহ কয়েকজন সদস্য আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ কামাল উদ্দিন খান বলেন, বাচ্চু দেওয়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। তাকে কোপানোর চেষ্টার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি।
মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সার্বিক বিষয়টি পুলিশ নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে।
মন্তব্য করুন