নিজের চার মাসের কন্যা সন্তান ফাতেমার খুনের মামলায় সাক্ষী হয়ে এবার আসামি হতে যাচ্ছেন মা রুমা বেগম। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামে। এ ঘটনায় নিহতের মা রুমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের মৃত. জলিল মিয়ার ছেলে দুবাই প্রবাসী অলি উল্লাহর স্ত্রী রুমা বেগম (২৬) বেশ কিছু দিন ধরে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ। গত শুক্রবার রাতে রুমা বেগম তার বড় মেয়ে খাদিজা (৬) ও চার মাস বয়সী অপর কন্যা সন্তান ফাতেমা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন।
মানসিক যন্ত্রণায় কাতর রুমা রাত দুইটার দিকে ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে যাওয়ার নাম করে ছোট সন্তান ফাতেমাকে বুকে নিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে ঘরে এসে ঘুমিয়ে যান। ভোরে ঘুম ভেঙে গেলে টের পান তার পাশে ফাতেমা নেই। সন্তান পাশে না পেয়ে চিৎকার শুরু করেন রুমা বেগম। তার আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। পরে পরিবারসহ প্রতিবেশীরা শিশুটিকে খুঁজতে শুরু করে। অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তাদের বাড়ির পাশে একটি পুকুরে শিশু ফাতেমার লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা ৯৯৯ কল দেয়। পুলিশ এসে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন।
৪ মাসের শিশু ফাতেমা কী করে পানিতে গেল এবং তার মৃত্যু রহস্যজনক বলে দাবি তুলে এলাকাবাসী। প্রাথমিকভাবে পুলিশও ধারণা করে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। সে কারণে নিহত ফাতেমা বেগমের মা রুমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রুমা বেগম তার সন্তানকে হত্যার দায় প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুব আলম জানান, ‘শিশু ফাতেমা মারা যাওয়ার ঘটনায় তার চাচা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নিহতের মা রুমা বেগমকে ১ নং সাক্ষী ও অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে শনিবার (২১ অক্টোবর) নবীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন রুমা বেগম মানসিকভাবে অসুস্থ।’
ওসি বলেন, ‘কন্যা সন্তান নিয়ে পারিবারিক অশান্তি ও বনিবনা না হওয়ায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে তিনি শিশুটিকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। রুমা বেগমের জবানবন্দি নেওয়ার জন্য তাকে রোববার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’
মন্তব্য করুন