কক্সবাজারের উখিয়ায় অভিযান চালিয়ে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) ওলামা বডির হেড ওসমান ওরফে সালমান মুরব্বীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৫ এর একটি টিম।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব হেডকোয়ার্টারের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
এ সময় স্থানীয় নাগরিক ও রোহিঙ্গাদের ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের টর্চার সেলেরও সন্ধান পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে বিদেশি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে ওসমান গত বছর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চলাকালে গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইর কর্মকর্তা হত্যাসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত। ওসমান মৃত নুরুজ্জামানের ছেলে এবং মো. ইউনুস সৈয়দ হোসেনের ছেলে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয়ে থাকে মিয়ানমারের রাখাইন স্টেটকেন্দ্রিক সন্ত্রাসী গ্রুপ আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ জুনুনির নির্দেশে। বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেড় শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সক্রিয় রয়েছে এবং ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫ হাজার রোহিঙ্গাকে আরসার সদস্য করা হয়েছে যাদের অধিকাংশই এখন আরসা থেকে সরে এসেছেন।
ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, সাধারণ রোহিঙ্গা এবং আরসার সদস্যরা কমান্ড বা নির্দেশ না মানলে তাদের গোপন আস্তানায় টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে থাকে আরসার অস্ত্রধারী ক্যাডাররা। এসবই হয়ে থাকে আরসার চিফ কমান্ডার আতাউল্লাহ জুনুনির নির্দেশে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে র্যাব-১৫ এর একটি টিম উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে আরসার এই দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৫।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সালমান মুরব্বী ২০১৮ সালে আরসা’তে যোগদান করে ক্যাম্প-১৩ এর দায়িত্বে ছিলেন। সেখানে তিনি সংগঠনটির জিম্মাদার ও পরবর্তীতে হেড জিম্মাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই ক্যাম্পে তিনি একটি ‘দাওয়াতি শাখা’র নেতৃত্ব দেন। যেটি রোহিঙ্গা তরুণদের প্রলোভন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে আরসাতে যোগদানে বাধ্য করে। তার নির্দেশনায় ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গাকে আরসায় যোগদান করায়। খরচ চালানোর জন্য আরসার সিনিয়র নেতাদের কাছ থেকে অর্থ আনতেন সালমান মুরব্বি। পরে ক্যাম্পের বিভিন্ন ব্লকে সেই অর্থ ভাগ করে দিতেন। পরে আরসাপ্রধান আতাউল্লাহ ও খালেদের নির্দেশনায় যা যা কাজ করার তা করা হতো।’
খন্দকার আল মঈন আরও জানান, মিয়ানমারের রাখাইনকেন্দ্রিক সন্ত্রাসী গ্রুপ আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পে অপরাধকর্ম করছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে এ পর্যন্ত ৭৩ জন আরসার অস্ত্রধারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন