মো. সাইদুর রহমান, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রাজনৈতিক অস্থিরতায় স্থবির পর্যটননগরী কুয়াকাটার জৌলুস

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকত। ছবি : কালবেলা
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকত। ছবি : কালবেলা

পর্যটন নগরী কুয়াকাটার সৈকত এখন সুনশান নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। কয়েক দিন আগেও যে সৈকতে তিলধারণের জায়গা ছিল না, সেই সৈকতে বিরাজ করছে সুনশান নিস্তব্ধতা। পর্যটকদের কোথাও কোনো আনাগোনা নেই। যদিওবা আসছেন, তবে তারা স্থানীয়। রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে স্থবির হয়ে পড়ে সব কর্মকাণ্ড। অলস সময় পার করে পর্যটনশিল্পের সাথে যুক্ত সব ব্যবসায়ীরা।

করোনার ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করছিল। পদ্মা সেতুকে আশীর্বাদ মনে করছিল ব্যবসায়ীরা। সেটায় এখন পুরোদমে ভাটা লেগেছে। পুরো সৈকতে নীরবতা। পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীদের মাঝে বিরাজ করছে হতাশা। সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটবে এ নিয়ে চলছে দুশ্চিন্তা।

চলতি মাসের ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটা সৈকতে তেমন কোনো পর্যটকদের আনাগোনা ছিল না। এর আগের সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবেও নগরী খালি ছিল। সপ্তাহের শুরুতে হরতাল ডাকার পরে এক দিন বিরতির পরে আবার শুরু হয়েছে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি। ফলে পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। মৌসুমের শুরুতে এমন খারাপ পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছেন না তারা।

স্পিডবোটের মালিক মো. লিটন বলেন, আমার ২২ জন কর্মচারী। দৈনিক হিসেবে আমার ২৫ হাজার টাকা লস। গত কয়েক দিনে আমার লাখ টাকা নেই। এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলো কীভাবে চলব জানি না। করোনার সময় জমানো টাকা সব শেষ। এখন ঋণের বোঝা টানছি। আরও কয়েকটি দিন এমন থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে।

ক্যামেরাপারসন মো. মাসুদ বলেন, প্রতিদিন ১ হাজার টাকা থেকে ১৫শ টাকা আয় হতো। গত কয়েক দিনে ডেইলি ১০০ টাকাও আয় হয় না। বৌ-বাচ্চা নিয়ে সংসার চালানো, মাস গেলে বাড়িভাড়া দিয়ে টিকে থাকাই ভার। এটা থেকে মুক্তি চাই, তা নাহলে না খেয়ে মারা যেতে হবে।

সৈকতে চা বিক্রেতা আলতাফ বলেন, মানুষ রাজনৈতিক দূরবস্থা দেখে ভয় পাচ্ছে ঘর থেকে বের হতে। ২৮ অক্টোবর থেকে এখন ১০ কাপ চা বিক্রি হয় না। এমন সংকট আমরা চাই না।

হোটেল গোল্ডেন ইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএম জহির জানান, আমরা সবার আগে ধাক্কা খাই। এ ধাক্কা কাটতে সময় লাগে অনেক দিন। এখন রাজনৈতিক সমস্যা সমাধান না হলে এ সংকট কবে নাগাদ কাটবে তা বলা মুসকিল। আমরা এখান থেকে মুক্তি চাই।

হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মোতালেব শরীফ বলেন, বৈশ্বিক নানা সংকটের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে মানুষ ঘর থেকে বের হয় না। গত কয়েক দিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যটকরা মুখ ফিরেয়ে নিয়েছে। এ সংকট দূর না হলে আমরা পথে বসে যাব।

বৈশ্বিক নানা সংকটের মধ্যে এখন যুক্ত হলো রাজনৈতিক অস্থিরতা। এ দুটির অভিঘাত একটি অন্যটিকে আরও বড় করে তুলবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটলে সেটিও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম হয়েছে নির্বাচন কেন্দ্র করে। ফলে সরকারের মনোযোগটা আরও বেশি বিচ্যুতি ঘটেছে। রাজনৈতিক দিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে অর্থনীতিকে ঠিক করার জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রয়োজন, সেদিকেই সরকারের এখন মনোযোগ দেওয়া উচিত।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২৮ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

চলন্ত বাসের খোলা লকারের ধাক্কায় যুবক নিহত

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ

পাবনায় নির্বাচনী প্রচারণায় জামায়াতের হামলার তীব্র নিন্দা বিএনপির

পুষ্টিগুণে ভরপুর রোজেল পানীয়

প্রশাসন ও গণমাধ্যম একে অপরের পরিপূরক : ডিসি অন্নপূর্ণা

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা

আ.লীগ নেতা মুকুল গ্রেপ্তার

বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার পথে প্রাণ গেল কলেজশিক্ষার্থীর

দলের প্রশ্নে আমরা সবাই এক : নজরুল ইসলাম আজাদ

১০

নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে ৬০ লাখ টাকা মু‌ক্তিপণ দাবি

১১

মেসির ভারত সফরে যুক্ত হলো আরও একটি শহর

১২

বাকৃবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

১৩

শিশু আফিয়ার জন্য তারেক রহমানের বিশেষ উপহারের ঘর নির্মাণ শুরু

১৪

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতল পর্তুগাল

১৫

পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না নাঈমের

১৬

সবাই মিলেমিশে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলব : সেলিমুজ্জামান

১৭

সড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা বাসে আগুন

১৮

বেপরোয়া বাসচাপায় প্রাণ গেল নানি-নাতনির

১৯

চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইউকে–ইউরোপ–অস্ট্রেলিয়া এডুকেশন এক্সপো

২০
X