স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে দুই মাস আগে তালাক দেন সোনাভান (৪৬)। আর তালাক দেওয়ার অপরাধে সাবেক স্বামী ধারালো রামদা দিয়ে স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছেন।
গুরুতর আহত গৃহবধূ সোনাভানকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে তাড়াশ ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের দেশীগ্রাম ইউনিয়নের কর্ণঘোষ গ্রামে। গৃহবধূ সোনাভান ওই গ্রামের মৃত সোনা বুল্লার মেয়ে ও তিন সন্ত্রানের জননী।
এ ঘটনায় রাতে তাড়াশ থানা পুলিশ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলা থেকে স্বামী সাগর হোসেন ওরফে আব্দুস সালামকে (৫০) আটক করেছে। আটক সাগর হোসেন ওরফে আব্দুস সালাম উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের কাঞ্চনেশ্বর গ্রামের মৃত গোলাম মওলাব কসের ছেলে।
বিষয়টি তাড়াশ থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, প্রায় ২৫ বছর আগে দেশীগ্রাম ইউনিয়নের কুমাল্লু গ্রামের মৃত সোনাবুল্লার মেয়ে সোনাভানের পার্শ্ববর্তী কাঞ্চনেশ্বর গ্রামের মৃত গোলাম মওলা বকসর ছেলে সাগর হোসেন ওরফে আব্দুস সালামের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তিনটি সন্তানও রয়েছে। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী সাগর হোসেন ওরফে আব্দুস সালাম নানাভাবে স্ত্রী সোনাভানকে শারীরিক ও অমানুষিক নির্যাতন করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় মাস দুই আগে আব্দুস সালাম স্ত্রীকে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। যে কারণে স্ত্রী সোনাভান অতিষ্ঠ হয়ে স্বামী আব্দুস সালামকে তালাক দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তাঘাটে ও বাড়িতে গিয়ে সোনাভানের সাবেক স্বামী তাকে মারপিটের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। এ কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সোনাভান এর প্রতিকার চাইতে স্থানীয় দেশীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদে যান। আর পরিষদ থেকে ফেরার পথে তার সাবেক স্বামী সোনাভানের পথরোধ করে তালাক দেওয়ার অপরাধে তাকে হত্যার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে সাবেক স্বামী ধারালো রামদা বের করে ওই গৃহবধূর নাকে কোপ দেন। তারপর তার ডান হাতের কনুইয়ে কোপ দেন। পরে পথচারীরা গৃহবধূকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় তাড়াশ ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মন্তব্য করুন