নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ভেজাল সার ও কীটনাশক দেদার বিক্রি হচ্ছে । দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এ ভেজাল রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে চলতি রবি মৌসুমে আলু, পিঁয়াজসহ অন্যান্য রবিশস্য চাষাবাদের কাঙ্ক্ষিত ফসল উৎপাদনে আশঙ্কা দেখা দেবে বলে ধারণা করছে কৃষকরা।
জানা যায়, উপজেলার ছোট-বড় হাট বাজার ছাড়াও এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট- ছোট দোকানগুলোতেও অত্যন্ত নিম্নমানের ভেজাল সার এবং নামি-বেনামি কোম্পানির কীটনাশক বিক্রি হচ্ছে দেদার। আলু, পিঁয়াজ, শাকসবজি ও ভুট্টা ক্ষেতের আগাছা এবং ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমনে বাড়তি ফলনের আশায় কম দাম ও নজরকাড়া মোড়ক দেখে এসব কীটনাশক ও সার কিনে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন প্রান্তিক পর্যায়ের সাধারণ কৃষক। শুধু তাই নয়, সারের নতুন বস্তা খুললে দেখা মিলে সারে মিশ্রিত নুরি পাথরের গুঁড়া, ইটের গুঁড়া ও বালুর মিশ্রণ।
এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। গয়াবাড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ গয়াবাড়ি মৌজার দবিরুল ইসলাম নামের একজন কৃষক বলেন, ২ নভেম্বর পার্শ্ববর্তী এলাকার গোডাউনের হাট থেকে একবস্তা ডলোমাইনট সার ক্রয় করি। পরে জমিতে সার প্রয়োগ করার আগে বস্তা খুলে দেখি সারের সঙ্গে বেশির ভাগই মিশ্রিত রয়েছে সিমেন্টের দানা, বালু ও পাথরের গুঁড়োর মতো দানা। পরে দ্রুত সার দোকানিকে অবগত করলে কিছু করার নেই বলে জানান তিনি। পরে তিনি বলেন, কোম্পানিকে এ সার ফেরত দেব। কোম্পানি যদি এ সার পরিবর্তন করে দেন, তাহলে পাবেন! না হয় কিছুই করার নেই।
অন্য আরেকজন কৃষক কৃষ্ণ কুমার ধর বলেন, আলুক্ষেতে আগাছা ও পোকামাকড় দমনে সিনজেনটা নামক ওষুধ দিয়েছি কোনো কাজ হয় নাই। উল্টো আলু গাছের পাতা সাদা হয়ে গেছে।
একাধিক সার ব্যবসায়ী জানান, কীটনাশক কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা তাদের বলেন ওষুধে কাজ না হলে টাকা ফেরত। এ সরল বিশ্বাসে আমরা কৃষকদের কাছে ওষুধ বিক্রি করি। তারা পরিবর্তন করে না দিলে, আমরা দেব কীভাবে?
ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (কৃষিবিদ) সেকেন্দার আলী বলেন, আমরা বাজারের সার সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতিমধ্যে ৩১০ বস্তা ভেজাল ডলোমাইট সার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর মাধ্যমে জব্দ করেছি। আমাদের এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন