পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘ডিম নিয়ে কেউ কেউ খেলতে চায়, আমরাও খেলব। আমাদের খেলা হবে ইমপোর্ট করা, নিয়ে আসা। দেশে এত আলু উৎপাদন হয় তাও এটা নিয়ে কিছু লোক খেলতে চেয়েছিল। আমরা আলু ইমপোর্ট করছি। আলুর দাম কমেছে।’
রোববার (৫ নভেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের আটতলা একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন ও একাডেমিক কার্যক্রম সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে ফিতা কেটে নতুন একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন করেন তিনি। পরে মন্ত্রী মদনপুর-দিরাই-শাল্লা সড়কের তিনটি নতুন সেতু, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় সুনামগঞ্জ শিল্প ও কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) এবং ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমি হাওরের সন্তান, কৃষকের সন্তান। গ্রামে জন্ম আমার। বাংলাদেশের ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। হাওরে আমরা কয়েক লাখ মানুষ বাস করি। আমাদের পূর্ব পুরুষরা হয়তো চিন্তাও করেননি, হাওরের বুকে বিশাল মেডিকেল কলেজ ও ৫০০ বেডের হাসপাতাল হবে। স্বপ্নপূরণ আমরা শুরু করেছি, আজ আমাদের অন্যতম স্বপ্ন পূরণ হলো।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘এসব কাজের প্রধান নায়ক ও পরিচালক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ। তার পরিচালনায়-অনুগ্রহে-উৎসাহে আমাদের পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা গত ৩-৪ বছর যাবৎ অন্য জায়গায় কষ্ট করে বসবাস করে পড়াশোনা করেছে। আমাদের শিক্ষকরা ধার করা জায়গায় থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।’
আমাদের আরও অনেক স্বপ্ন আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়, টেকনিক্যাল স্কুল, টেনিক্যাল ইন্সটিটিউট, কৃষি গবেষণা, মৎস্য গবেষণা ও বিটাক স্থাপন করার স্বপ্ন আছে। একের পর এক সব আমরা পূরণ করব। সুনামগঞ্জে রেল নিয়ে আসার স্বপ্নও আমরা পূরণ করব।’
আগামী সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ হবে সুনামগঞ্জে বিমানবন্দর করা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘টাঙ্গুয়া বিশাল একটা পর্যটনের সম্ভাবনার জায়গা। আমরা যদি সরকারে থাকি তাহলে ইনশাল্লাহ, আমাদের প্রথম কাজ হবে সুনামগঞ্জে ছোট বিমানবন্দর বা এয়ার স্ট্রিপ রানওয়ে করা। প্রশাসনকে আমি অনুরোধ করেছি, জায়গা খুঁজে বের করতে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখনো শতভাগ নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি হয়নি। তবে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে মানুষের মাঝে আনন্দ-উদ্দীপনা বাড়তে থাকবে। নির্বাচনের নব্বই দিনেরও বেশি এখনো বাকি, নির্বাচনী পরিবেশের ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে পরিবেশ আরও ভালো হতে থাকবে। দেশের মানুষ জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি চায় না। মানুষ এখন উন্নয়ন চায়। দেশে এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আমাদের দেশকে আরও এগিয়ে নিতে হলে আওয়ামী লীগ সরকারের বিকল্প নেই।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ, সুনামগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মনোজিৎ মজুমদার, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, সিনিয়র সহসভাপতি ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ হোসেন, সুনামগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের প্রকল্প পরিচালক ডা. শামস উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম, সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিনা পানি দাস, মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী সানজিদা খান ঐশি প্রমুখ।
হাওরের রাজধানী খ্যাত সুনামগঞ্জের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে তিন বছর আগে থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়। ৫০ জন করে প্রতিবছর এখানে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। শান্তিগঞ্জ উপজেলার ৫০ শয্যা হাসপাতাল ভবনে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে গত তিন বছর। বর্তমানে মেডিকেল কলেজটিতে ১০টি বিভাগ ও ২০ জন শিক্ষক রয়েছেন।
একাডেমিক ভবনের ৯৫ ভাগ শেষ হয়েছে জানিয়ে সুনামগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় আশরাফুল ইসলাম বললেন, অন্য ভবনগুলোর কাজও ৬৫ ভাগ শেষ।
মন্তব্য করুন