সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জের বসন্তপুর নদীবন্দরের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (১৩ নভেম্বর) খুলনার জনসভায় উপস্থিত হয়ে তিনি এ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের ৮ নভেম্বরের এক স্মারকপত্রে বিষয়টি সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনা অঞ্চলের বিভিন্ন স্থাপনা উদ্বোধনের অংশ হিসেবে নবঘোষিত বন্দরটির কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
সীমান্তের ইছামতী-কালিন্দী ও কাকশিয়ালী নদীর মোহনায় সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের বসন্তপুর গ্রাম। ৫৮ বছর আগেও এই গ্রামে ছিল সমৃদ্ধ নৌবন্দর। এই নৌবন্দরের মাধ্যমে বৈদেশিক বাণিজ্য হতো ভারতের সঙ্গে। তখন বসন্তপুর ইমিগ্রেশন দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করা যেত। এ ছাড়া সাতক্ষীরায় উৎপাদিত মাছ, কাঠ ও কাঠের তৈরি সামগ্রীসহ স্থানীয়ভাবে উদপাদিত বিভিন্ন পণ্য ভারতে রপ্তানি হতো। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর এই বন্দরটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, ‘সাতক্ষীরা জেলার উন্নয়নে কিছু করার তাড়না থেকে কালীগঞ্জের বসন্তপুর নৌ-বন্দরটি চালুর উদ্যোগ মাথায় আসে। এ জন্য ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে আবেদন করি। তিনি বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বন্দরটি চালুর জন্য সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ১০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বসন্তপুর বন্দর’ ঘোষণা দেওয়া হয়। যা আগামী ১৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুকন্যা উদ্বোধন করবেন। বন্দরটি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন হবে, মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’
বসন্তপুর নদীবন্দরবিষয়ক সাব কমিটির সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী বলেন, ‘বসন্তপুর নদীবন্দর কালীগঞ্জ তথা বাংলাদেশের ইতিহাসের সাক্ষী। এই নদীবন্দর পুনরায় চালু করায় এখানকার আর্থসামাজিক অবস্থা বদলে যাবে। মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।’
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার বলেন, ‘১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামাল, বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শহীদ শেখ আবু নাসেরসহ পরিবারের সদস্যরা বসন্তপুর নদী দিয়ে ভারতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করতেন। এই এলাকাটি বঙ্গবন্ধু পরিবারের স্মৃতি বিজড়িত। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী বসন্তপুর নৌ-বন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন, এটি জানার পরে এলাকায় আনন্দের জোয়ার বইছে।’
মন্তব্য করুন