সিরাজগঞ্জের তাড়াশের শোকাবহ আমবাড়িয়া গণহত্যা দিবস আজ ১৩ নভেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রামের বাড়িঘরে আগুন দেয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। সে সঙ্গে গুলি করে হত্যা করে ১৩ জনকে। এদের মধ্যে তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
এর আগে ১১ নভেম্বর হানাদার বাহিনী নওগাঁর যুদ্ধে পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে পরাজিত হয়। ধারণা করা হয়, ওই পাকিস্তানি সেনারা পালানোর পথে নিজেদের ক্ষোভ মেটাতে নারকীয় হত্যাকাণ্ডে মেতে ওঠে।
এ দিন শহীদদের মধ্যে রয়েছেন, আমবাড়িয়া গ্রামের শহিদ ইয়ার মোহাম্মাদ, শহিদ মেহের মন্ডল, শহিদ সুলতান সেখ, শহীদ সফিজ উদ্দিন সেখ, শহীদ দেছের আলী, শহীদ ফয়েজ উদ্দিন, শহীদ মোক্তার হোসেন, শহীদ ওসমান আলী, শহীদ মজিবর রহমান, শহীদ কিয়ামত আলী, শহীদ জুব্বার ফকির, শহীদ আমিন উদ্দিন, শহীদ আব্দুর রহমান।
তাড়াশের বিনসাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সাইদুর রহমান সাজু বলেন, ‘পাকিস্তানি বাহিনী ১৯৭১-এর ১১ নভেম্বর তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ওই যুদ্ধের প্রতিশোধ নিতেই পার্শ্ববর্তী আমবাড়িয়া গ্রামে হামলা চালিয়ে মানুষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। পরে নির্বিচারে গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে গ্রামের তিনজন মুক্তিযোদ্ধাসহ মুক্তিকামী ১০ জনকে।’
বর্তমানে আত্মত্যাগকারী শহীদদের স্মরণে তাড়াশ উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে আমবাড়িয়া গণকবরে স্মৃতিতম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।
মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ম্যাগনেট বলেন, ‘প্রতি বছর ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বরে আমবাড়িয়ায় কর্মসূচি পালন করা হলেও ১৩ নভেম্বর গণহত্যা দিবসে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় না।’
এ দিকে তরুণ কবি ও সাংবাদিক হাদিউল হৃদয় বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও সরকারিভাবে দিবসটি পালন করা হচ্ছে না। তাই সরকারিভাবে দিবসটি পালনের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের কালের সাক্ষী আমবাড়িয়া গণকবর। এ দিন (১৩ নভেম্বর) গণহত্যা দিবস পালনে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন