

বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে, শরণার্থীদের আশ্রয় ও যৌথভাবে মুক্তিযুদ্ধ করে ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল (জামুকা)।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলা হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক এবং সমাবেশ পরিচালনা করেন কমান্ড কাউন্সিলের মহাসচিব অধ্যাপক ড. ফজলে আলী।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ জলিল, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ ভাসানী, বাংলাদেশ উন্নয়ন পার্টির সভাপতি সৈয়দ মোকলেছুর রহমানসহ জাতীয় নেতারা।
অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠদের ক্ষমতা না দিয়ে পাকিস্তানি বর্বর বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গণহত্যা চালায়। সেই মুহূর্তে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের সূচনায় মুজিবনগরে বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধিদের সমর্থনে মহান নেতা বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী, জেনারেল এমএজি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান করে বাংলাদেশের প্রথম সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। যুদ্ধকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণায় সাম্য, মানিবক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে নির্ধারিত ছিল এবং এর বাস্তবায়নের জন্য ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা তুলে ধরে অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির নেতৃত্বে ভারত আমাদের সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করে। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় এবং ভারতের মিত্রবাহিনী বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে। বিশ্ববাসী আমাদের সমর্থন করে। এই যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনী পরাজয় বরণ করে। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। যুদ্ধে ৩০ লাখ লোক শহীদ হয়, ২ লাখ নারী সম্ভ্রম হারায়, ১৫ হাজার ভারতীয় মিত্রবাহিনী আত্মহুতি দেয়। বিগত দিনে ৬ ডিসেম্বর মৈত্রী দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে ভারত যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে বাংলাদেশের জনগণ তা চিরদিন স্মরণে রাখবে। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী অটুট থাকবে।
বাংলাদেশ ভারতের বন্ধুত চিরস্থায়ী করার জন্য দুই দেশের মাঝে আলোচনায় সব সমস্যার সমাধান ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে এবং আগামী দিনগুলোতে শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি পথে আমরা যৌথভাবে এগিয়ে যাব বলে যোগ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন