গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য বাল্যবন্ধুকে হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ জড়িত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই। বুধবার (২৯ নভেম্বর) এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পিবিআই গাজীপুর ইউনিটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান।
গ্রেপ্তার জয় চন্দ্র রায় (১৯) দিনাজপুরের নারায়নপুর দেবপাড়া গ্রামের কমল চন্দ্র রায়ের ছেলে।
পুলিশ সুপার বলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার কলাবাধা এলাকায় স্থানীয় ইউনুছ আলীর বাড়ীর ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করে রাজমিন্ত্রির যোগালীর কাজ করতেন আজাদ খান (২০)।
গত ২৪ নভেম্বর রাত সাড়ে ৭ টার দিকে আজাদ বাসা হতে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। রাতে বাসায় না ফিরলে আজাদ খানের মা তার ছেলের মোবাইলে ফোন কল করলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে তাকে অশালীন ভাষায় গালাগাল করেন এবং ছেলেকে পেতে হলে ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ অবস্থায় লোকজন নিয়ে ছেলেকে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন তিনি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে গত ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় কলাবাঁধা এলাকায় স্থানীয় মধুর মাছের খামারে ভাসমান অবস্থায় ছেলের মরদেহ শনাক্ত করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের মা মাজেদা খাতুন কালিয়াকৈর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর গত মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় উপজেলার মৌচাক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা জয় চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জয় চন্দ্র রায় জানান, ভিকটিম আজাদ তার ছোট বেলার বন্ধু। তারা উভয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকায় টাকা রোজগারের কোনো উপায় না পেয়ে বন্ধু ভিকটিম আজাদকে আটক করে বা হত্যা করে তার পরিবারের নিকট থেকে মুক্তিপণ আদায় করার পরিকল্পনা করে জয় চন্দ্র রায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমকে নিয়ে মধুর টেক নামক এলাকায় গাজা সেবন করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যান। সেখানে ভিকটিম আজাদকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে রাতে আজাদের মোবাইল থেকে ভিকটিমের মাকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণে দাবি করেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান আরও বলেন, সকল তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ জয় চন্দ্র অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। পরে তাকে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়।
মন্তব্য করুন