আতিকুর রহমান, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৩২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

কুমিল্লার প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গুণবতী পুদিনা

পুদিনা পাতা। ছবি : কালবেলা
পুদিনা পাতা। ছবি : কালবেলা

রসুইঘরে যেমন পুদিনা পাতা ব্যবহার করা হয়, সুস্বাস্থ্য রক্ষায়ও আছে এর ব্যাপক গুরুত্ব। কেননা এ থেকে আমরা পেতে পারি রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ের অনেক উপাদান। তাছাড়া এ গাছের পাতা তরি-তরকারির সাথে সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পুদিনা এক প্রকারের হার্ব-জাতীয় উদ্ভিদ। বিশ্বের সব দেশেই পুদিনার গাছ জন্মে। কিন্তু আমাদের দেশে পুদিনা পাতার কদর দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তবে জেনে রাখা ভালো, পুদিনা পাতা সহজলভ্য হলেও এটা ফেলনা নয় এর ঔষধিগুণ ব্যাপক। আমাদের শরীরের নানা রোগ প্রতিরোধে পুদিনা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

কালের পরিক্রমায় আধুনিক চিকিৎসার অজুহাতে অবহেলায় জর্জড়িত হয়ে কুমিল্লার প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে ঔষধি উদ্ভিদ পুদিনা। এটিকে বাণিজ্যিক উদ্দেশে চাষের আওতায় আনার পরামর্শ স্থানীয় সচেতন মহলের।

পুদিনা আমাদের সকলের পরিচিত একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Mentha spicata। প্রাচীন অনেক আয়ূর্বেদ শাস্ত্রেএর গুনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পুদিনা এক প্রকারের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। আয়ুর্বেদে ঔষধি ভেষজ হিসেবেই দেখা হয় এইপাতাকে। ঠান্ডা হোক বা গরম বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নানাভাবে ব্যবহার করা যায় এই গাছের পাতা।

এই গাছের পাতা তরকারির সাথে সুগন্ধি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। সালাদ, চাটনি কিংবা শীতের সকালে এক কাপ পুদিনাপাতার চা মন সতেজ করে দিতে পারে। খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেওয়া এই উপাদানের ভেষজ গুণাগুণও অনেক। ঔষধি এই গাছব্যবহার করা হচ্ছে আদিকাল থেকে। পটাশিয়াম পূর্ণ পুদিনা পাতায় খনিজ উপাদানের মাঝে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, ভিটামিন সি ও এ পাওয়া যাবে। চর্বি ও ক্যালরির মাত্রা কম এবং কোলেস্টেরল নেই। তাই আঁশসমৃদ্ধশাক হিসেবে পুদিনা পাতা বেশ উপকারী।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোনায়েদ কবির খান বলেন, পানি জমবে না এমন উঁচু স্থানে পুদিনাপাতাচাষ করতে হয়। দেশে অল্প কিছু সংখ্যক কৃষক ছাড়া কেউ পুদিনাপাতা বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন না। অনেকে আবার নিজের প্রয়োজনে বাড়ির আশপাশে পুদিনাপাতার গাছ লাগিয়ে রেখেছেন। কুমিল্লা অঞ্চলের মাটিতে পুদিনাপাতার বাম্পার ফলনের উপযোগী। ওষুধি গাছ উৎপাদন করতে শুধু জৈবসার দিতে হয়। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, ছোটবেলায় দেখেছি প্রায়ই পুদিনা পাতা দিয়ে ভর্তা, শাক ও তরকারি রান্না করা হতো। এতে আমাদের অসুখ-বিসুখ তেমন হতো না। সে সময় পথের ধারে, বাড়ির আঙিনায় ও জমিতে অহরহ পুদিনা গাছ দেখা যেতো।আমার বাসায় ৫টা টবের মধ্যে আমি পুদিনার চাষ করি এতে সারা বছর আমার চলে যায়। বিশেষ করে রমজান মাসে পুদিনাপাতা আমার খাবারে প্রতিদিন থাকে। গ্রামীণ জনপদে এখন আর সে রকমভাবে এই ঔষধি গাছটি দেখা যায় না।

কুমিল্লা জেলায় কর্মরত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউনানি চিকিৎসক ডা. সোহেল রানা কালবেলাকে বলেন, আমাদের দেশ থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে হার্ব-জাতীয় এ উদ্ভিদটি। বিলুপ্তির পথে যেসব ভেষজ উদ্ভিদ ও গাছ সেগুলো সংরক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে। এই সংরক্ষণের দায়িত্বটা আমাদের প্রত্যেকের। এই সংরক্ষণের উদ্যোগ বাস্তবায় হলে মানুষের চিকিৎসায় এসব গাছ ও উদ্ভিদ কাজে আসবে। আমরা জানি ভেষজ জাতীয় চিকিৎসায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রায় নেই বল্লেই চলে আবার খরচও তুলনামূলকঅনেক কম।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিয়েতে দাওয়াত না দেওয়ায় সংঘর্ষ

৮০০ বছর ধরে শক্তি জমছে নরসিংদী অঞ্চলে, বড় ভূমিকম্প হবেই

বাংলাদেশিদের আপ্যায়নে আবেগাপ্লুত সাদিও মানে

পুলিশের হাতে কামড় দিয়ে পালালেন রবিন

প্রাইম ইউনিভার্সিটির ৩য় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

নির্বাচন না হলে দেশে সংকট দেখা দেবে : জামায়াত আমির

দল থেকে সুখবর পেলেন বিএনপির ১০ নেতা

অ্যালকালাইন ওয়াটার আসলে কতটা উপকারী

শক্তিশালী পিঠ বানানোর আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম : সামান্থা

নানা আয়োজনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১০

১০০ দিনে ক্যাপিটালসে মোস্তাফিজকে ঘিরে অদ্ভুত নাটক

১১

এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলও নরসিংদী

১২

‘সংসদ নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আছে’

১৩

গৌহাটিতে প্রথম দিন শেষে চাপে প্রোটিয়ারা

১৪

ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা, কবে কোথায় আঘাত হানবে

১৫

আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করার সন্নিকটে বাংলাদেশ

১৬

জাহেলি যুগ আর ফিরে আসবে না : ধর্ম উপদেষ্টা

১৭

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো গ্রেপ্তার

১৮

সংবিধানই বিচার বিভাগের বৈধতার বাতিঘর : প্রধান বিচারপতি

১৯

জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে সিদ্ধান্তের টানাপোড়েনে শেষ হলো কপ সম্মেলন

২০
X