ভোলায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল টিকা খাওয়ানো থেকে বঞ্চিত হয়েছে বিভিন্ন চরাঞ্চলে বসবাসকারী সহস্রাধিক শিশু। কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দায়িত্বে অবহেলা ও উদাসীনতাকে দায়ি করছেন স্থানীয় চরের বাসিন্দারা।
এলাকার জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সারা দেশের ন্যায় ভোলা জেলায় ১০টি স্থায়ী কেন্দ্রসহ মোট ১ হাজার ৬৯০টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে দুইজন জনস্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও দ্বীপ জেলার অদূরবর্তী চরগুলোতে এ কার্যক্রম যথাযথ ভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দৌলতখান উপজেলার চর মদনপুর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের একটিতেও ইপিআই ক্যাম্প বসেনি। এমনকি যায়নি কোনো স্বাস্থ্যকর্মী। ফলে ওই চরে থাকা সহস্রাধিক শিশু সরকার ঘোষিত ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আর এ কারণে কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দায়িত্বে অবহেলা ও উদাসীনতাকে দায়ি করছেন স্থানীয় চরের বাসিন্দারা।
ওই ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা ইব্রাহিম ও মাকছুদ জানায়, চরের কোথাও টিকার ক্যাম্প বসেনি। এখানে কোনো স্বাস্থ্যকর্মীকে খুঁজেও পাওয়া যায়নি।
চরের ৬নং ওয়ার্ডের স্বচ্ছ শিক্ষালয়ের শিক্ষিকা জান্নাত বেগম ও স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মো. নিরব জানায়, আজ শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর নির্ধারিত তারিখ থাকলেও এখানে কোনো ক্যাম্প বসেনি এবং স্বাস্থ্য কর্মীরাও আসেনি।
৪নং ও ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার লোকমান মাঝি ও মো. আলাউদ্দিন জানান, এখানে অনেক শিশু রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা না আসায় তারা টিকা খাওয়ানো থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এবিষয়ে কথা বলতে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ টি এম নাসিরুদ্দিন নান্নুকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
দৌলতখান উপজেলার ইপিআই কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, মদনপুর ইউনিয়নের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে আমাদের ক্যাম্প রয়েছে। যদি কোনো স্বাস্থ্যকর্মী না গিয়ে থাকে তবে আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করে আপনাকে জানাব। তিনি আরও বলেন, বাদ পড়া শিশুদের পরবর্তী ৩ দিনে খাওয়ানো হবে।
ভোলার সিভিল সার্জন ডা. কে এম শফিকুজ্জামান বলেন, এ ধরনের প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে তিনি ওই উপজেলার ইপিআই কর্মকর্তার নাম্বার দিয়ে তার সাথে কথা বলতে বলেন।
উল্লেখ, ১২ ডিসেম্বর ভোলায় দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৭৭ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো কার্যক্রমে ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী ৩২ হাজার ৯৯৭ জন শিশুকে এক লাখ ইউনিটের একটি নীল রংয়ের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী দুই লাখ ৪৩ হাজার ২৮০ জন শিশুকে দুই লাখ ইউনিটের লাল রংয়ের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
মন্তব্য করুন