কলম ও পেন্সিল দিয়ে আমরা কত কিছুই না লিখতে পারি। কিন্তু যদি বলা হয় খোদাই করে লিখতে হবে তবে যে কেউ থমকে যাবে। আর লেখার বস্তু যদি হয় মোবাইল, ডিম আর সুই। হ্যাঁ, এমনই একজনের দেখা মিলেছে কিশোরগঞ্জে। যিনি বিভিন্ন বস্তুতে খোদাই করে লিখে থাকেন নাম, আঁকেন ফুল, পাতা। কারও নাম লিখতে প্রতিটি অক্ষরের মূল্য নেন মাত্র পাঁচ টাকা। এ কাজটিই করছেন শাহাবুদ্দিন নামের এক কারিগর।
শাহাবুদ্দিন নামের ওই কারিগর তার প্রতিভা দিয়ে সুনিপুণ দক্ষতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন ৪১ বছর ধরে। বর্তমানে শাহাবুদ্দিনের বয়স ৬৩ বছর হলেও কাজের ক্ষেত্রে বয়েসের ছাপ প্রভাব ফেলেনি মোটেও। বরং দিন দিন তার আরও জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়নের পাঁচধা গ্রামে বাড়ি শাহাবুদ্দিনের। চাচার হাত ধরে এই পেশায় আসেন তিনি। চাচার মতো তিনিও খোদাইকে বেছে নেন পেশা হিসেবে। এক সময় ঘড়ি, সাইকেল, কলম, ঘরের আসবাবপত্র, আংটি, শ্বেত পাথরে খোদাইয়ের কাজ করলেও বর্তমানে তা বিলুপ্তির পথে। তাই তিনি ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছেন তিনি।
মানুষের ভিড় দেখে দূর থেকে মনে হবে রাস্তার পাশে কোনো ব্যক্তি হয়তো জাদু দেখাচ্ছেন। কিংবা বিভিন্ন গাছের ওষুধ বিক্রি করছেন। তবে না চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। হাতুরি আর বাটাল দিয়ে মোবাইলের গায়ে খোদাই করে লেখা হচ্ছে ফুল, পাখিসহ প্রিয়জনের নাম।
এমন চিত্র গত এক বছর ধরে দেখা যায় কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এলাকায়। পাসপোর্ট তৈরি করতে আসা লোকজন নিজেদের মোবাইলে প্রিয়জনের নাম, ফুল, পাখির ছবি খোদাই করে এঁকে নিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিন জানা যায়, ৪১ বছরের কাজের দক্ষতায় শাহাবুদ্দিন এখন মোবাইল ছাড়াও অতিক্ষুদ্র জিনিস ডিম, সুই ও ঘড়ির কাঁটায় লিখেন সুনিপুণ হাতে। তার হাতের ছোঁয়ায় খোদাই করা নিপুণ কারুকাজ দেখে বিস্মি ও আনন্দিত হয় সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে, অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন শাহাবুদ্দিন।
শাহাবুদ্দিন বলেন, সুই, ডিম, পাথর, ঘড়ির সেকেন্ডের কাটাতে লিখতে পারেন তিনি। এ কাজ করে হওয়া আয়ে চলে তার সংসার। নিজের পেশায় খুশি বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন